Connect with us
ক্রিকেট

ক্রিকেটে ফলো-অন হলে কী হয়?

What happens when there is a follow-on in cricket
২০২৩ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ফলো-অনে পড়েও জিতেছিল নিউজিল্যান্ড। ছবি- সংগৃহীত

লাল বলের ক্রিকেটে প্রায়ই ব্যাটিং ব্যর্থতার দায়ে কোনো কোনো দলকে পড়তে হয় ফলো-অনের মুখোমুখি৷ এতে বেশিরভাগ সময় বোলারদের দাপটে ব্যাটিং দলের কপালে পরাজয় জোটে৷ তবে মাঝে মাঝে নিশ্চিত পরাজয়কে জয়ে পরিণত করারও বিরল রেকর্ড রয়েছে লাল বলের ক্রিকেট ইতিহাসে৷

সাধারণত প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেট ও টেস্ট ক্রিকেটে ফলো-অনের প্রচলন রয়েছে৷ যেখানে প্রথম ইনিংসে ব্যাট করা দল বড় সংগ্রহ দাঁড় করানোর পর যদি প্রতিপক্ষ দল অন্তত ২০০ রানের পিছিয়ে থেকে অলআউট হয়, তাহলে পড়তে হয় ফলো-অনের মুখোমুখি। এতে পুনরায় ব্যাটিংয়ে নামতে হয় দলটিকে।

ফলো-অন কে ঘোষণা করেন?

টেস্ট ক্রিকেটের প্রথম ইনিংসে ব্যাট করা দলের মোট রানের চেয়ে প্রতিপক্ষ দল যদি অনেক পিছিয়ে থাকে, তাহলে ওই দলের অধিনায়ক প্রতিপক্ষ দলের জন্য ফলো-অন ঘোষণা করতে পারেন। ঠিক কত রানে পিছিয়ে থাকলে একটি দলকে ফলো-অনে পড়তে হয়? এক্ষেত্রে ম্যাচের দিনভেদে রানের সংখ্যা ভিন্ন হতে পারে৷

কত রানে পিছিয়ে থাকলে ফলো-অন হয়?

ম্যাচের দৈর্ঘ্য অনুসারে ফলো-অন বিষয়টি ঘোষণা করা হয়৷ পাঁচ দিনের ম্যাচের ক্ষেত্রে ২০০ রানে কোনো দল এগিয়ে থাকলে ওই দলের অধিনায়ক প্রতিপক্ষ দলের জন্য ফলো-অন ঘোষণা করতে পারেন৷ তবে রঞ্জি ট্রফির মতো প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটের ক্ষেত্রে ১৫০ রানে এগিয়ে থাকলেই ফলো-অন ঘোষণা করা যায়৷ দুই দিনের ম্যাচে ১০০ রান, এক দিনের ম্যাচে ৭৫ রানের ক্ষেত্রে ফলো-অন ঘোষণা করা হয়৷

ফলো-অনে পড়েও ম্যাচ জেতার রেকর্ড গড়েছেন যারা-

ক্রিকেট ইতিহাস প্রথম ফলো-অনে পড়েও জয়ের রেকর্ড গড়ে ইংল্যান্ড৷ ১৮৯৪ সালের ১৪ ডিসেম্বর সিডনিতে ঐতিহ্যবাহী অ্যাশেজ টেস্টে চমকে দিয়েছিল তারা। প্রথমে ব্যাট করে অস্ট্রেলিয়া ৫৮৬ রানের পাহাড়সম সংগ্রহ করে অস্ট্রেলিয়া৷ ইংল্যান্ড জবাবে ৩২৫ রানে অলআউট হয়। এরপর অস্ট্রেলিয়া ইংল্যান্ডকে ফলো অন করায়। ইংল্যান্ড দ্বিতীয় ইনিংসে দুরন্ত প্রত্যাবর্তন করে ৪৩৭ রান স্কোরবোর্ডে যোগ করে। ইংলিশ পেস আক্রমণের সামনে অস্ট্রেলিয়ার দ্বিতীয় ইনিংস শেষ হয়ে যায় মাত্র ১৬৬ রানে। ফলে ইংল্যান্ড ম্যাচটি ১০ রানে জিতে নেয়।

১৯৮১ সালে হেডিংলি টেস্টে প্রথম ইনিংসে ৪০১ রান সংগ্রহ করে অস্ট্রেলিয়া। জবাবে মাত্র ১৭৪ রানে অলআউট হয় ইংল্যান্ড৷ ফলে প্রথম ইনিংসে ২২৭ রানে লিড নিয়ে ইংল্যান্ডকে ফলো-অনে পাঠায় অস্ট্রেলিয়া৷ এবারও চমকে দেয় তারা। দ্বিতীয় ইনিংসে অজি বোলারদের দাপটের দেয়াল ভেঙে ৩৫৬ রানের সংগ্রহ দাঁড় করায়। মনোবল হারায় অজিরা। জবাবে মাত্র ১১১ রানে গুটিয়ে যায় তারা৷ ফলে ১৮ রানে জয় পায় ইংল্যান্ড৷

২০০১ সালে ক্রিকেটের নন্দনকান খ্যাত ইডেন গার্ডেন্স সাক্ষী ছিল এক ঐতিহাসিক ম্যাচের। কলকাতায় ওই ম্যাচে অস্ট্রেলিয়া প্রথম ইনিংসে ৪৪৫ রান করে। জবাবে ভারতীয় দলের প্রথম ইনিংসে ১৭১ রানে গুটিয়ে যায়। অজিরা যথারীতি ফলো-অন করায় ভারতকে। তারপর দ্বিতীয় ইনিংসে অজিদের আধিপত্য ভেঙে রুখে দাঁড়ায় ভারত। সেদিন পঞ্চম উইকেটে রাহুল দ্রাবিড় ও ভিভিএস লক্ষ্মণের ঐতিহাসিক ৩৭৬ রানের পার্টনারশিপ আজও লেখা ক্রিকেট ইতিহাসে। ভিভিএস লক্ষ্মণের ২৮১ রানের ইনিংস খেলেছিলেন। দ্রাবিড় করেছিলেন ১৮০। অস্ট্রেলিয়ার সামনে জয়ের জন্য ছিল ৩৮৪ রানের লক্ষ্যমাত্রা। অস্ট্রেলিয়া গুটিয়ে যায় মাত্র ২১২ রানে। ফলে ভারত ম্যাচটি জিতে নেয়৷

VVS Laxman and Rahul Dravid partnership

২০০১ সালে ভিভিএস লক্ষ্মণ এবং রাহুল দ্রাবিড় ভারতের অন্যতম সেরা জুটি গড়েছেন। ছবি- সংগৃহীত 

২০২৩ সালে নিউজিল্যান্ডের ব্যাসিন রিজার্ভ গ্রাউন্ডে ক্রিকেট ইতিহাসের সর্বকালের অন্যতম সেরা ম্যাচ হয়েছিল৷ ইংল্যান্ড প্রথমে ব্যাট করে ৮ উইকেট হারিয়ে ৪৩৫ রান তুলে প্রথম ইনিংস ডিক্লেয়ার করে। জবাবে নিউজিল্যান্ডের প্রথম ইনিংস গুটিয়ে যায় ২০৯ রানে। ইংল্যান্ড ফলো অন করায় নিউজিল্যান্ডকে। কিউইরা দ্বিতীয় ইনিংসে দুরন্ত প্রত্যাবর্তন করে তোলে ৪৮৩ রান। জেতার জন্য ইংল্যান্ডের জন্য ২৫৭ রানের লক্ষ্য ছুঁড়ে দেয় তারা। জবাবে ইংল্যান্ড জয়ের বন্দর থেকে মাত্র ১ রানে পিছিয়ে থেকে ২৫৬ রানে গুটিয়ে যায়। হাইভোল্টেজ সেই ম্যাচটি নিউজিল্যান্ড জিতে নেয় ১ রানে৷

আরও পড়ুন: ক্রিকেটে কনকাশন সাবস্টিটিউট কি?

ক্রিফোস্পোর্টস/১এপ্রিল২৪/টিএইচ/এমটি

Click to comment

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Focus

More in ক্রিকেট