
ঘরের মাঠ ন্যু ক্যাম্পে না হলেও, স্পেনের অলিম্পিক স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়েছিল চ্যাম্পিয়নস লিগ সেমিফাইনালের প্রথম লেগ। সমর্থকদের প্রত্যাশা ছিল, জয় নিয়েই মাঠ ছাড়বে বার্সেলোনা। কিন্তু ইন্টার মিলানের দূর্গে আটকে গেল কাতালানদের জয়রথ।
ম্যাচের শুরুতেই ঘটে অঘটন। মাত্র ৩০ সেকেন্ডে দুর্দান্ত ব্যাকহিল শটে গোল করে ইন্টারের হয়ে দলকে এগিয়ে দেন মার্কাস থুরাম। এটি চ্যাম্পিয়নস লিগ সেমিফাইনালের ইতিহাসে সবচেয়ে দ্রুততম গোল। তবে এখানেই থেমে থাকেনি চমক। ২১তম মিনিটে ডেনজেল ডামফ্রিসের চমৎকার এক ওভারহেড কিকে ব্যবধান ২-০ করেন তিনি, যিনি প্রথম গোলেও এসিস্ট করেছিলেন।
অলিম্পিক স্টেডিয়ামের ৫০ হাজার ৩১৪ দর্শকের মাঝে তখন নেমে আসে নিস্তব্ধতা। তবে দলটা যেহেতু বার্সেলোনা—যারা পার করছে উড়ন্ত সময়, তাই তারা সহজে হাল ছেড়ে দেয়নি। বার্সার হয়ে ১০০তম ম্যাচ খেলতে নামা লামিন ইয়ামাল একের পর এক দৌড়ে রীতিমতো ভীত করে তুলেছিলেন ইন্টার রক্ষণভাগকে।
২৪তম মিনিটে আসে সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। ইন্টারের পাঁচজন ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে জটলার মধ্যে থেকে দুর্দান্ত এক শটে দূরের পোস্ট দিয়ে বল জালে পাঠান ইয়ামাল। গোটা গ্যালারি জুড়ে তখন ‘ইয়ামাল! ইয়ামাল!’ চিৎকার। এর কিছু পরেই ম্যানচেস্টার সিটি তারকা আর্লিং হলান্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম স্ন্যাপচ্যাটে ইয়ামালের গোলের ছবি পোস্ট করে ক্যাপশনে লেখেন, ‘এই ছেলেটা অবিশ্বাস্য।’
এই গোলে ১৭ বছর ২৯১ দিন বয়সে ইয়ামাল ভেঙে দেন কিলিয়ান এমবাপ্পের রেকর্ড—চ্যাম্পিয়নস লিগ সেমিফাইনালে সবচেয়ে কম বয়সে গোল করার। এমবাপ্পে এই কীর্তি গড়েছিলেন ১৮ বছর ১৪০ দিনে।
আরও পড়ুন:
»এবারও পারলেন না রোনালদো, বাড়ল অপেক্ষা
»পিএসএলে লাহোর-কোয়েটা ম্যাচ সহ আজকের খেলা(১ লা মে ২০২৫)
ম্যাচের ৩৮তম মিনিটে রাফিনিয়ার অ্যাসিস্টে ফেরান তোরেসের গোলে সমতায় ফেরে বার্সা (২-২)। এই অ্যাসিস্টের মাধ্যমে রাফিনিয়া বার্সার হয়ে এক মৌসুমে গোল অবদানের (গোল ও অ্যাসিস্ট মিলিয়ে ২০টি) দিক থেকে লিওনেল মেসির পাশে বসেন। বিরতিতে দুই দল যায় ২-২ গোলের সমতায়—যা ২০০০ সালের পর প্রথম লেগে সর্বোচ্চ গোলসংখ্যার ম্যাচ।
দ্বিতীয়ার্ধের ৬৪তম মিনিটে আবারো ইন্টারকে এগিয়ে দেন ডামফ্রিস। তবে মাত্র দুই মিনিট পরই আবারও সমতায় ফেরে বার্সেলোনা। কর্নার থেকে আসা বল ইয়ামাল ‘ডামি’ করে ছেড়ে দিলে রাফিনিয়া ফাঁকায় পেয়ে যান। তাঁর শটে বল ক্রসবারে লেগে ফিরে আসে এবং ইন্টার গোলকিপার ইয়ান সোমারের পিঠে লেগে জালে ঢুকে পড়ে। স্কোরলাইন হয়ে যায় ৩-৩।
বাকি সময়ে আর কোনো গোল না হওয়ায় হাইভোল্টেজ সেমিফাইনালের প্রথম লেগ শেষ হয় ৩-৩ সমতায়। মৌসুমের রেকর্ডসংখ্যক দর্শকের সামনে অলিম্পিক স্টেডিয়ামে এই ম্যাচ ফুটবলপ্রেমীদের মনে গেঁথে থাকবে অনেকদিন। কারণ, চ্যাম্পিয়নস লিগ সেমিফাইনালে এত বেশি গোলের ড্র ম্যাচ শেষবার দেখা গিয়েছিল ১৯৯৯ সালে।
ক্রিফোস্পোর্টস/১মে২৫/আইএএইচআর /এনজি
