
১২৮ বছর পর আসন্ন লস অ্যাঞ্জেলেস-২০২৮ অলিম্পিকে ফিরছে ক্রিকেট৷ এ নিয়ে অনেকের আগ্রহের কমতি নেই। অনেকেই জানতে চান কোন সংস্করণ কিংবা কোন ফরম্যাটে মাঠে গড়াবে অলিম্পিক ক্রিকেট।
অলিম্পিকে ক্রিকেট ফিরে আসার অন্যতম কারণ দক্ষিণ এশিয়ার বৃহৎ বাজার। লাভজনক মিডিয়া স্বত্ব ও স্পনসরশিপ বাজারে প্রবেশের আগ্রহ থেকেই ক্রিকেটকে ফেরানো হয় অলিম্পিকে। এমনকি দক্ষিণ এশিয়ায় ক্রিকেটের তুমুল জনপ্রিয়তার কথা মাথায় রেখে নির্ধারণ করা হয়েছে ম্যাচের সময়সূচিও।
আনুষ্ঠানিকভাবে ২০২৮ সালের ১৪ জুলাই থেকে শুরু হবে লস অ্যাঞ্জেলেস অলিম্পিক। অবশ্য তারও প্রবেশের আগে; অর্থাৎ ১২ জুলাই শুরু হয়ে যাবে গেমস ক্রিকেট। যে ভেন্যুতে খেলা হবে, সেটি লস অ্যাঞ্জেলেস থেকে ৫০ কিলোমিটার দূরে, প্রবেশের ফেয়ারগ্রাউন্ডে নির্মিত নতুন এক মাঠে। যেখানে প্রতিদিন হবে দুটি করে ম্যাচ। প্রথম ম্যাচ শুরু হবে বাংলাদেশ সময় রাত ১০টায়। দ্বিতীয় ম্যাচ পরদিন সকাল সাড়ে ৭টায়। ১৭ দিন ধরে চলবে ক্রিকেট টুর্নামেন্ট।
আরও পড়ুন:
» টেস্টে ‘স্টপ ক্লক’, ক্রিকেটে আরও যত নিয়ম আনল আইসিসি
» দুর্গম পাহাড় থেকে দেশের গর্ব, ঋতুপর্ণার ফুটবল জার্নি যেমন ছিল
ম্যাচের সময় রাত ১০টা ও সকাল সাড়ে ৭টা নির্ধারণ নিয়ে আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির (আইওসি) স্পোর্টস ডিরেক্টর কিট ম্যাককনেল বলেন, ‘উপমহাদেশের মূল সব ক্রিকেট বাজার মাথায় রেখে সময়সূচি তৈরি করেছি আমরা। আইসিসি আমাদের যে ভিশন দিয়েছে, তা হলো খেলোয়াড় ও সেরা দলগুলোকে অলিম্পিকের মঞ্চে নিয়ে আসা। ক্রিকেট ও অলিম্পিক—উভয়ই এর মাধ্যমে লাভবান হবে।’
কিট ম্যাককনেলই মূলত ক্রিকেটকে অলিম্পিকে ফেরাতে অগ্রণী ভূমিকা রেখেছেন। তিনি আরও বলেন,‘এখনও তিন বছর বাকি, কিন্তু আমরা খুবই আশাবাদী ক্রিকেট যেভাবে এগোচ্ছে এটি গেমসকে ভালো কিছু দিতে পারবে। অলিম্পিকও ক্রিকেটের বৈশ্বিক প্রসারে ভূমিকা রাখতে পারবে।’
খেলবে ছয় দল, যেভাবে হবে টুর্নামেন্ট
পুরুষ ও নারী—দুই বিভাগে ভিন্ন ভিন্ন ছয়টি দল অংশ নেবে। ছয়টি দল দুই গ্রুপে ভাগ হয়ে খেলবে। গ্রুপে প্রতি দল একই গ্রুপের অন্য দুই দলের সঙ্গে খেলবে। এরপর অন্য গ্রুপের দুটি দলের সঙ্গে খেলবে, তবে একই পজিশনে থাকা দলের সঙ্গে নয়। যেমন ‘এ’ গ্রুপের শীর্ষ দল, ‘বি’ গ্রুপের শীর্ষ দলের সঙ্গে খেলবে না। খেলবে দ্বিতীয় অথবা তৃতীয় দলের সঙ্গে
সব মিলিয়ে চারটি ম্যাচের ভিত্তিতে শীর্ষে থাকা দুটি দল ফাইনাল খেলবে। তৃতীয় ও চতুর্থ দলের মধ্যে হবে ব্রোঞ্জের লড়াই। পদক নির্ধারণী ম্যাচ হবে ২০ ও ২৯ জুলাই।
আরও পড়ুন:
» কেন এত ফুটবলাররা ১০ নম্বর জার্সি পরতে চায়?
» সাফ অনূর্ধ্ব-২০ চ্যাম্পিয়নশিপে সবচেয়ে বেশি শিরোপা কার?
কোন ছয় দল খেলবে
অলিম্পিক গেমস ছয় দল অংশ নেওয়ার কথা থাকলেও কোন ছয় দল অংশ নেবে, তা এখনো নিশ্চিত নয়। স্বাগতিক দল হওয়ায় খেলবে যুক্তরাষ্ট্র। বাকি পাঁচটি দল কীসের ভিত্তিতে, তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি। এক্ষেত্রে আইসিসির কিছু সদস্য টি-টোয়েন্টি র্যাঙ্কিংকেই যোগ্যতা হিসেবে দেখতে চায়। আবার কোনো কোনো সদস্য চায় যোগ্যতা অর্জনের জন্য প্রতিযোগিতার আয়োজন।
ইংল্যান্ড ও স্কটল্যান্ড ‘গ্রেট ব্রিটেন’ নামে অংশ নিতে পারে টুর্নামেন্টে, যেমনটা অলিম্পিকের অন্যান্য গেমসেও দেখা যায়।
নিউ ইয়র্কের পিচ সমস্যা পুনরাবৃত্তি হবে না
গত বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সহ-আয়োজক ছিল যুক্তরাষ্ট্র। সেখানকার বিশেষ করে নিউইয়র্কের পিচ নিয়ে হয়েছিল ব্যাপক সমালোচনা। ৩৪,০০০ আসনের নিউইয়র্কের অস্থায়ী স্টেডিয়ামটি দর্শনীয় হলেও, ড্রপ-ইন পিচ নিয়ে তীব্র সমালোচনা হয়েছিল, বিশেষ করে ভারত-পাকিস্তানের ম্যাচে।
তবে অলিম্পিক পিচ নিয়ে অসন্তোষ থাকবে না বলে আশ্বস্ত করেছে আইওসি। ম্যাককনেল বলেন, ‘ক্রিকেটে মাঠ, বিশেষ করে পিচের মান খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এবার যেহেতু ভেন্যু চূড়ান্ত, তাই আমরা এখন সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনায় এগোনোর সুযোগ রয়েছে আমাদের। শুধু বিশ্বকাপই নয়, প্রতিটি ক্রিকেটে ম্যাচেই পিচ নিয়ে চলে আলোচনা। এটা মাথায় রেখেই এগোচ্ছি আমরা।’
নিউইয়র্কের মতো নয়, বরং পোমোনার মাঠটি স্থায়ীভাবে ক্রিকেট সুবিধা হিসেবে গড়ে তোলা হবে। এটি ব্যবস্থাপনায় থাকবে আইপিএল ও যুক্তরাষ্ট্রের মেজর লিগ ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করা নাইট রাইডার্স ফ্র্যাঞ্চাইজি। যুক্তরাজ্যের বিখ্যাত ক্রিকেট ভিত্তিক ম্যাগাজিন ‘দ্যা ক্রিকেটার’ এক প্রতিবেদনে জানায়, আইওসি ও আইসিসি ওই মাঠে পিচ বসানো নিয়ে ইতোমধ্যে নাইট রাইডার্স মালিকপক্ষের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে, তবে সেখানে নিউইয়র্কের মতো ড্রপ-ইন পিচ বসানো হবে না।
ক্রিফোস্পোর্টস/১৮জুলাই২৫/টিএইচ/বিটি
