
আবারও লাল-সবুজের জার্সি গায়ে মাঠ মাতাবেন হামজা চৌধুরী। প্রথমবার বিদেশের মাটিতে খেললেও এবার বল পায়ে ছন্দ আঁকবেন দেশের মাটিতেই। আর সেই ছন্দকে রঙিন করে তুলতে সাজানো হয়েছে ঢাকার জাতীয় স্টেডিয়াম।
দিন বদলেছে, সুদিন ফিরেছে দেশের ফুটবলে। হামজা-জামালদের প্রতি তাই প্রত্যাশার পারদ আরো বৃদ্ধি পাচ্ছে দেশের ফুটবল প্রেমীদে। আগামী ১০ জুন সিঙ্গাপুরের সাথে বাংলাদেশের এএফসি বাছাই পর্বের ম্যাচ দিয়ে আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করবে পরিবর্তিত জাতীয় স্টেডিয়াম।
দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে গত ২৩ মে জাতীয় স্টেডিয়াম বাফুফের হাতে হস্তান্তর করেছে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ-এনএসসি। নতুন রূপে আন্তর্জাতিক মানের আধুনিক ফুটবল ভেন্যু হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছে এই স্টেডিয়ামকে। আধুনিকায়নের ছোঁয়ায় বদলে গেছে স্টেডিয়ামের চেহারা ও অবকাঠামো।
আরও পড়ুন
» হামজা-সামিত-ফাহমিদুলরা বাংলাদেশে আসবেন কবে?
» মাঠেই লুটিয়ে পড়ে না ফেরার দেশে ১৫ বছরের ফুটবলার
গ্যালারির শেড, খেলার মাঠ, ড্রেসিং রুম, ফ্লাডলাইট, গ্যালারির চেয়ার, সিসিটিভি ক্যামেরা, জেনারেটর, এলইডি জায়ান্ট স্ক্রিন, অ্যাথলেটিক ট্র্যাক, ডিজিটাল বিজ্ঞাপন বোর্ড, প্রেস বক্স, টিকিট কাউন্টার, মেডিকেল রুম, ভিআইপি বক্স এবং প্রেসিডেন্ট বক্সকে আধুনিক প্রযুক্তি ও নির্মাণশৈলীতে নতুন করে সাজানো হয়েছে।
মাঠের কাঠামোতেও এসেছে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন। দেড় ফুট গভীর পর্যন্ত পুরনো মাটি সরিয়ে মাঠ নতুন করে প্রস্তুত করা হয়েছে এবং উন্নত পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে। বাফুফের চাহিদা অনুযায়ী, মাঠে পানি সরবরাহের জন্য আগের স্প্রিংলার সিস্টেমের পরিবর্তে আধুনিক পপ-আপ ওয়াটারিং সিস্টেম স্থাপন করা হয়েছে। খেলার মাঠে দেশীয় দুর্বাঘাস ব্যবহার করে পরিবেশবান্ধব ও টেকসই পিচ তৈরি করা হয়েছে।
খেলোয়াড়দের সুবিধার্থে পুরনো দুটি ড্রেসিং রুমের স্থলে এখন আন্তর্জাতিক ও স্থানীয় পর্যায়ের জন্য চারটি অত্যাধুনিক ড্রেসিং রুম নির্মাণ করা হয়েছে। সঙ্গে রয়েছে আন্তর্জাতিক মানের জিম ও মেডিকেল রুম। পাঁচতলার মিডিয়া সেন্টারকে আধুনিক ও সম্প্রসারিত করা হয়েছে, যা এখন আরও সুসজ্জিত ও কার্যকর। ভিআইপি বক্সে স্থাপন করা হয়েছে ২০ ফুট বাই ৮ ফুট মাপের বুলেটপ্রুফ গ্লাস, যা নিরাপত্তা ও আরামদায়ক অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করে।
সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন এসেছে আলো ব্যবস্থায়। পুরো স্টেডিয়ামের লাইটিং সিস্টেম আধুনিকায়ন করা হয়েছে। স্পেনের মাদ্রিদ থেকে আমদানিকৃত ‘ফিলিপস’ ব্র্যান্ডের উন্নতমানের ফ্লাডলাইট স্থাপন করা হয়েছে, যা সন্ধ্যার পর স্টেডিয়ামকে আলোকিত করে তোলে। এই লাইটিং ব্যবস্থার কার্যকারিতা নিশ্চিত করতে ইতোমধ্যে পরীক্ষামূলকভাবে চালু করা হয়েছে।
২০২১ সালে দাপ্তরিকভাবে এই স্টেডিয়ামের কাজ শুরু হয়। প্রাথমিক বাজেট ধরা হয়েছিলো ৯৮ কোটি টাকা। কিন্তু ধাপে ধাপে এর ব্যয় গিয়ে দাড়ায় ১৫৫ কোটি টাকা। শুরুতে এর ধারণ ক্ষমতা ৩৬ হাজার করা হলেও নকশা জটিলতা মিটিয়ে বর্তমানে এর ধারণ ক্ষমতা ২২ হাজারের কিছুটা বেশি।
ক্রিফোস্পোর্টস/২৬মে২৫/এসএ/আইএএইচআর/
