
ওয়ানডে ক্রিকেটে বাংলাদেশের উত্থান এক দশক আগেই শুরু হয়েছিল। ২০১৫ সালের পর থেকে ওয়ানডেতে সোনালি সময় পার করেছে টাইগাররা। বড় কোনো ইভেন্টে সাফল্যের দেখা না পেলেও দ্বিপাক্ষিক সিরিজগুলোতে বেশ সাফল্য পেয়েছে দলটি। যে কারণে কেউ কেউ ওডিআই ফরম্যাটকে বাংলাদেশের প্রিয় ফরম্যাট হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। কিন্তু বর্তমানে নিজেদের প্রিয় ফরম্যাটেই বেহাল দশা টাইগারদের।
সাম্প্রতিক সময়ে ওডিআই ফরম্যাটে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স তলানীতে গিয়ে ঠেকেছে। ২০২৩ সাল থেকেই এই ফরম্যাটে বাজে খেলছে টাইগাররা। ঘরের মাঠে ইংল্যান্ড-আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ হার। এশিয়া কাপে বাজে পারফরম্যান্স এবং বিশ্বকাপেও বাজে পারফরম্যান্সের পাশাপাশি নেদারল্যান্ডসের মতো দলের কাছে হেরেছে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা।
সবশেষ দুটি দ্বিপাক্ষিক সিরিজেও বাজে খেলেছে বাংলাদেশ। গত নভেম্বরে আফগানিস্তানের কাছে সিরিজ হার এবং ডিসেম্বরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে হোয়াইটওয়াশ হয়েছে তারা। আর সবশেষ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে প্রতিপক্ষের সামনে দাঁড়াতেই পারেনি নাজমুল হোসেন শান্তর দল। সবমিলিয়ে ওডিআইতে টাইগারদের পারফরম্যান্স তলানীতে গিয়ে ঠেকেছে।
আরও পড়ুন:
» শ্রীলঙ্কা সিরিজে দেখা যাবে তাসকিনকে? যা বলছে বিসিবি
» আইসিসির নতুন র্যাঙ্কিং প্রকাশ, বাংলাদেশের অবস্থান কোথায়?
বাজে পারফরম্যান্সের কারণে আইসিসি থেকে দুঃসংবাদও পেয়েছে বাংলাদেশ। গতকাল আইসিসির প্রকাশিত বার্ষিক হালনাগাদ র্যাঙ্কিংয়ে চার রেটিং পয়েন্ট হারিয়েছে বাংলাদেশ। এতে এক ধাপ পিছিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের নিচে নেমে গিয়েছে টাইগাররা।
র্যাঙ্কিংয়ে অবনতির কারণে এবার নতুন এক শঙ্কায় পড়েছে বাংলাদেশ। ২০২৭ সালে ওয়ানডে বিশ্বকাপে সরাসরি অংশগ্রহণ নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
২০২৭ সালে ওয়ানডে বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হবে আফ্রিকার দেশ দক্ষিণ আফ্রিকা, জিম্বাবুয়ে ও নামিবিয়ার মাটিতে। উইজডেনের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৭ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত দক্ষিণ আফ্রিকা এবং জিম্বাবুয়ে ছাড়া ওডিআই র্যাঙ্কিংয়ের সেরা আটে থাকা দলই বিশ্বকাপে সরাসরি খেলবে। অর্থাৎ দক্ষিণ আফ্রিকা ও জিম্বাবুয়ে র্যাঙ্কিংয়ে সেরা আটের মধ্যে থাকলে র্যাঙ্কিংয়ে দশ নম্বর পর্যন্ত থাকা দলগুলো সরাসরি অংশগ্রহণ করবে।
তবে বর্তমানে জিম্বাবুয়ে আটের বাইরে এবং দক্ষিণ আফ্রিকা সেরা আটের মধ্যে রয়েছে। ২০২৭ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত র্যাঙ্কিংয়ে আর কোনো পরিবর্তন না আসলে নবম স্থানে থাকা দল বিশ্বকাপে সরাসরি পারবে। সেক্ষেত্রে দশম স্থানে থাকা দলকে বাছাইপর্ব খেলবে হবে। তবে ২০২৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপকে সামনে রেখে বাংলাদেশের ওডিআইয়ের সংখ্যা ধীরে ধীরে কমে আসছে। তাই র্যাঙ্কিংয়ে উন্নতি নিয়ে শঙ্কা জেগেছে।
আরও পড়ুন:
» বাংলাদেশ বনাম পাকিস্তান: এক নজরে টি-টোয়েন্টি সিরিজ সূচি
» বাংলাদেশ বনাম ভারত : একনজরে ওয়ানডে ও টি-২০ সিরিজের সূচি
পরবর্তী বিশ্বকাপ টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে হওয়ার কারণে এবারের এশিয়া কাপ ও টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে হবে। যে কারণে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের দিকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে বিসিবি। আসন্ন পাকিস্তান সিরিজে ৩টি করে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি খেলার কথা ছিল দুই দলের। তবে এশিয়া কাপ ও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রস্তুতির কথা মাথায় রেখে ওয়ানডে বাদ দিয়ে পাঁচটি টি-টোয়েন্টি খেলবে দুই দল।
আইসিসির ভবিষ্যৎ সূচি পরিকল্পনা (এফটিপি) অনুযায়ী, ২০২৭ সালের মার্চের আগ পর্যন্ত ২৯ ওয়ানডে খেলার কথা রয়েছে বাংলাদেশের। এই ম্যাচগুলোতে ভালো করেই ওয়ানডে র্যাঙ্কিংয়ে উন্নতি করতে হবে টাইগারদের। যদিও এর মাঝে কেবল ৮ ম্যাচে প্রতিপক্ষ আয়ারল্যান্ড এবং জিম্বাবুয়ে। বাকি ২১ ম্যাচে ভারত, অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, নিউজিল্যান্ড, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের মতো শক্তিশালী দলগুলোর মুখোমুখি হবে ফিল সিমন্স শিষ্যরা।
উল্লেখ্য, ২০২৭ সালে আফ্রিকা মহাদেশের দক্ষিণ আফ্রিকা, নামিবিয়া এবং জিম্বাবুয়ের মাটিতে অনুষ্ঠিত হবে ওয়ানডে বিশ্বকাপ। ১৪ দলের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হবে ক্রিকেটের সবচেয়ে জনপ্রিয় বৈশ্বিক আসর। আসন্ন এই টুর্নামেন্টে সরাসরি অংশ নেবে দক্ষিণ আফ্রিকা ও জিম্বাবুয়ে। তবে নামিবিয়া আইসিসির পূর্ণ সদস্য না হওয়ায় কোয়ালিফায়ার খেলে বিশ্বকাপে জায়গা করে নিতে হবে।
ক্রিফোস্পোর্টস/৬মে২৫/বিটি
