
আসন্ন ফিফা বিশ্বকাপ ২০২৬ এর মূল আয়োজক যুক্তরাষ্ট্র। তবে কিছু ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে কানাডা ও মেক্সিকোতে। ফিফা সভাপতি জিয়ান্নি ইনফান্তিনো বারবার দাবি করেছেন, বিশ্বকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত যুক্তরাষ্ট্র। তবে টুর্নামেন্ট ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে নানা শঙ্কা।
প্রথম দফায় টিকিট বিক্রি শুরু হতেই ব্যাপক প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। ৪৫ লাখের বেশি সমর্থক টিকিট কিনতে ড্রতে অংশ নেন। কিন্তু আকাশচুম্বী টিকিট মূল্যের কারণে হতাশ হতে হয়েছে অনেক সমর্থককে।
যুক্তরাষ্ট্রে উদ্বোধনী ম্যাচের টিকিট মূল্য ধরা হয়েছে ৫৬০ থেকে ২,২৩৫ ডলার, কাতার বিশ্বকাপ ২০২২ এ যা ছিলো মাত্র ৫৫ থেকে ৬১৮ ডলার। ফাইনালের সর্বনিম্ন টিকিট ২,০৩০ ডলার, সর্বোচ্চ ৬,০০০ ডলার। প্রাথমিক রাউন্ডের কিছু ম্যাচে ৬০ ডলারের টিকিট থাকলেও সেগুলোর সংখ্যা খুবই সীমিত।
এছাড়া ফিফা টিকিট পুনরায় বিক্রির ক্ষেত্রে ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়ের ওপরই ১৫% চার্জ আরোপ করেছে। এ পরিস্থিতিতে ভক্তরা বলছেন, এবারই ইতিহাসে সবচেয়ে ব্যয়বহুল বিশ্বকাপ হতে চলেছে।
কাতার ও রাশিয়ার মতো যুক্তরাষ্ট্র এখনও পর্যন্ত কোনো দ্রুত ভিসা প্রক্রিয়া চালু করেনি। ইউরোপের নাগরিকরা ভিসা ছাড়াই যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করতে পারবেন, তবে এশিয়া, আফ্রিকা ও দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলোর সমর্থকদের জন্য ভিসা বাধ্যতামূলক।
অনেক দেশে মার্কিন ভিসার জন্য সাক্ষাৎকারের তারিখ পেতে এক বছরেরও বেশি সময় লেগে যাচ্ছে। তাই হাজার হাজার সমর্থক টিকিট পাওয়ার পরও সময়মতো যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করতে পারবেন কি না, তা অনিশ্চিত।
যুক্তরাষ্ট্রে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক সহিংসতা ও গুলিবর্ষণের ঘটনায় নিরাপত্তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।২০২৪ সালে দেশটিতে প্রায় ৫০০টি গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। ২০২৫ সালের শুরু থেকেই একাধিক রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডও ঘটেছে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দেশজুড়ে জাতীয় গার্ড মোতায়েন করেছেন, বিশেষ করে লস অ্যাঞ্জেলেসের মতো শহরে, যেখানে অনুষ্ঠিত হবে আটটি ম্যাচ।
অনেকে আশঙ্কা করছেন, বিভাজন ও অস্থিরতার কারণে বিশ্বকাপ আয়োজনে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যুক্তরাষ্ট্রের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে। ফিফা বলছে বিশ্বকাপ হবে ‘যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্বের সমাবেশ’। কিন্তু ভক্ত ও বিশ্লেষকদের মতে, টিকিটের অস্বাভাবিক দাম, ভিসা জটিলতা ও নিরাপত্তা অনিশ্চয়তা সব মিলিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্র সত্যিই কতটা প্রস্তুত বিশ্বকে স্বাগত জানানোর জন্য।
ক্রিফোস্পোর্টস/৬অক্টোবর২৫/এআই
