
২০০৭ সালে যশোরে জন্ম জারিফ আবরারের। বাবা আর্মি অফিসার হওয়ায় ঢাকায় বদলি হলে সেখানেই শুরু হয় তার টেনিস ফেডারেশনে আসা–যাওয়া, আর সেখান থেকেই গড়ে ওঠে টেনিসের প্রতি ভালোবাসা।
২০২৩ সালে প্রথমবারের মতো যুক্তরাষ্ট্রে যান তিনি। এরপর থেকে অংশ নিয়েছেন জুনিয়র ও সিনিয়র ডেভিস কাপ, এটিএফ (ATF), ইউটিএস (UTS) এবং যুক্তরাষ্ট্রের একাধিক আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে।
দেশের প্রতিনিধিত্ব করেই একদিন গ্র্যান্ড স্ল্যাম কোর্টে লাল-সবুজ পতাকা ওড়াতে চান বাংলাদেশের তরুণ টেনিস তারকা জারিফ আবরার। একান্ত সাক্ষাৎকারে জারিফ আবরার তুলে ধরেছেন টেনিসের সঙ্গে তার পথচলার গল্প। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন ক্রিফো স্পোর্টস এর ক্রীড়া প্রতিবেদক ইশতিয়াক হোসেন রাতুল।

৩৫তম বাংলাদেশ ওয়ার্ল্ড টেনিস ট্যুর জুনিয়র জে-৩০ প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের তরুণ তারকা জারিফ আবরার। ছবি- ক্রিফো স্পোর্টস
ক্রিফো স্পোর্টস : জারিফ, আপনার বেড়ে ওঠা কোথায়?
জারিফ আবরার : বেড়ে ওঠা যশোরে। বাবা যেহেতু আর্মি অফিসার ছিলেন, তাই ঢাকায় পোস্টিং হওয়ার পর ঢাকায় আসা। আমি প্রথম যুক্তরাষ্ট্রে যাই ২০২৩ সালে, জুনিয়র ডেভিস কাপ খেলতে।
ক্রিফো স্পোর্টস : অন্যান্য খেলাধুলা রেখে টেনিসেই কেন আসা হলো?
জারিফ আবরার : ছোটবেলা থেকে বাবাকে টেনিস খেলতে দেখতাম। এরপর নিজে যখন খেলা শুরু করি, তখনই ভালো লেগে যায়।
ক্রিফো স্পোর্টস : প্রথম কোচ কে ছিলেন?
জারিফ আবরার : মূলত বাবার অধীনেই খেলা শুরু করি, তারপর টিংকু ভাইয়া সাহায্য করতেন।
ক্রিফো স্পোর্টস : এখন পর্যন্ত কয়টি আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে অংশ নিয়েছেন এবং সবচেয়ে স্মরণীয় কোনটি?
জারিফ আবরার : অনেকগুলো টুর্নামেন্টই খেলেছি— জুনিয়র ডেভিস কাপ, সিনিয়র ডেভিস কাপ, এশিয়ান টেনিস ফেডারেশন (ATF), ইউটিএস, এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের বেশ কয়েকটি টুর্নামেন্টেও অংশ নিয়েছি। এর মধ্যে জুনিয়র ডেভিস কাপ সবচেয়ে স্মরণীয়, কারণ সেখানে প্রথমবারের মতো একজন বাংলাদেশি হিসেবে আমি ছয়জন বিদেশিকে হারিয়েছিলাম।
ক্রিফো স্পোর্টস : আপনার মতে বিশ্বের সেরা টেনিস তারকা কে এবং প্রিয় তারকা কে?
জারিফ আবরার : আমার মতে সেরা নোভাক জোকোভিচ, আর প্রিয় তারকাও নোভাক জোকোভিচ।
ক্রিফো স্পোর্টস : যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের টেনিসের কী কী পার্থক্য রয়েছে?
জারিফ আবরার : যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেনিং কোয়ালিটি অনেক ভালো, সঙ্গে তারা অনেক ভালো ইকুইপমেন্ট ব্যবহার করে। এছাড়া তারা অনেক টুর্নামেন্ট খেলে, যা আমরা পাই না।
ক্রিফো স্পোর্টস : বাংলাদেশের টেনিসকে বিশ্বমানের করতে হলে এখনই কী কী পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি এবং দীর্ঘমেয়াদে কী পরিকল্পনা নেওয়া যেতে পারে বলে মনে করেন?
জারিফ আবরার : প্রথমত বেশি বেশি টুর্নামেন্ট আয়োজন করা জরুরি। পাশাপাশি যদি অন্তত সেরা দশজন খেলোয়াড়কে বিদেশে ট্রেনিংয়ের সুযোগ করে দেওয়া যায়, তাহলে আমরা অনেক দূর যেতে পারব, ইনশাআল্লাহ। এছাড়া বল, র্যাকেট এবং কোর্টগুলোর মান উন্নয়ন করা দরকার। আর স্পনসর ম্যানেজ করাটাও জরুরি, কারণ টেনিস একটি ব্যয়বহুল খেলা।
ক্রিফো স্পোর্টস : একটি ইনডোর স্টেডিয়ামের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন কি?
জারিফ আবরার : অবশ্যই একটি ইনডোর স্টেডিয়াম খুবই প্রয়োজন। বর্ষাকালে দুই-তিন দিন টানা অনুশীলন করা যায় না, বসে থাকতে হয়। যদি কোনোভাবে একটি ইনডোর কোর্ট করা যায়, তাহলে এই সমস্যা আর থাকবে না।
ক্রিফো স্পোর্টস : যারা সদ্য টেনিস শুরু করছে, তাদের কী পরামর্শ দেবেন?
জারিফ আবরার : আমার মনে হয়, অবশ্যই একজন ভালো কোচের অধীনে থাকতে হবে। পাশাপাশি একজন ভালো মানুষ হতে হবে, কারণ টেনিস ভদ্রলোকের খেলা।
ক্রিফো স্পোর্টস : সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
জারিফ আবরার : আপনাকে এবং ক্রিফো স্পোর্টস পরিবারকে ধন্যবাদ।
ক্রিফোস্পোর্টস/১৪অক্টোবর২৫/এসএ
