
শারজায় দীর্ঘদিন পরে জাকের আলীর ব্যাট হাসলো। অনেকদিন পর তার ব্যাট থেকে এল ছক্কা, যা যেন শুধু ব্যক্তিগত খরা কাটাল না, দলের জন্যও তৈরি করল জয়ের সেতু। আফগানিস্তানের বিপক্ষে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে তার ব্যাটিং বাংলাদেশকে শুধু ম্যাচে ফিরিয়ে আনেনি, শেষ পর্যন্ত এনে দিয়েছে সিরিজ জয়ও।
বাংলাদেশের ১৪৮ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুটা ছিল দুঃস্বপ্নের মতো। ২৪ রানের মধ্যে সাজঘরে ফেরেন তিন টপ অর্ডার ব্যাটার। এমন সময়ে শামীম হোসেনকে সঙ্গে নিয়ে দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেন জাকের আলী। দুজনের ব্যাট থেকে আসে ৫৬ রানের জুটি, যা ম্যাচের গতিপথ ঘুরিয়ে দেয়। শেষ পর্যন্ত ৫ বল হাতে রেখে ২ উইকেটের জয় নিশ্চিত করে বাংলাদেশ।
ব্যক্তিগত ইনিংসে জাকের খেলেছেন ২৫ বলে ৩৩ রানের কার্যকরী এক ইনিংস। মাঝারি মানের ইনিংস হলেও তার দুইটি ছক্কাই বদলে দিয়েছে ম্যাচের চেহারা। ৮৬ বল পর আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে ছক্কার দেখা পেলেন তিনি। এর আগে সর্বশেষ ছক্কা এসেছিল সিলেটে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে, গত ৩ সেপ্টেম্বর। এরপর এশিয়া কাপ ও আফগানিস্তান সিরিজ মিলিয়ে টানা ৭ ইনিংস ও ৮৬ বল কেটেছে ছক্কাহীন।
গতকাল শারজায় মোহাম্মদ নবীর বলে লং অনের ওপর দিয়ে আছড়ে পড়া সেই শট যেন অনেকদিনের চাপ ঝেড়ে ফেলল। এরপর বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি দ্বিতীয় ছক্কার জন্য। আজমতউল্লাহ ওমরজাইয়ের বলকেও উড়িয়ে দিলেন গ্যালারিতে। ক্যারিয়ারে জাকেরের মোট ছক্কার সংখ্যা এখন ৪০। বাংলাদেশের ব্যাটারদের মধ্যে ষষ্ঠ সর্বোচ্চ, যদিও একই সংখ্যক ছক্কা আছে তানজিদেরও, তবে তিনি ইনিংস খেলেছেন এক ম্যাচ কম।
ম্যাচ শেষে পুরস্কার বিতরণীতে জাকের আলী বলেন, ‘সত্যিই ভালো লাগছে। শুধু সিরিজ জয় নয়, আমাদের দল হিসেবে যে কেমনভাবে খেলতে হবে, সেটারও প্রমাণ দিয়েছি গত দুই ম্যাচে। আজকে আমরা আরও ক্লিয়ার ছিলাম। বোলাররা শুরুতে ছন্দ তৈরি করেছিল, আর আমাদের ব্যাটারদের দায়িত্ব ছিল সেটাকে এগিয়ে নেওয়া।’
শামীমের সঙ্গে তার পার্টনারশিপ নিয়েও বললেন, ‘আমাদের কাজ ছিল ইতিবাচক থাকা। বোলারদের বিরুদ্ধে চাপ তৈরি করতে হলে বাউন্ডারি খুঁজে বের করতেই হতো। আমরা তাই করেছি।’
এই জয় শুধু বাংলাদেশের জন্য সিরিজ নিশ্চিত করল না, জাকের আলীর জন্যও হয়ে থাকল আত্মবিশ্বাস ফিরে পাওয়ার এক মঞ্চ। ব্যাট হাতে তার ছক্কা ফেরানো মানে হয়তো সামনের দিনে টাইগার ব্যাটিংয়ে নতুন এক রঙের ইঙ্গিত।
ক্রিফোস্পোর্টস/৪অক্টোবর২৫/টিএ
