এবারের নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপে ইতিহাস গড়া ইনিংস খেলে ভারতকে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দিয়েছেন জেমাইমা রদ্রিগেজ। ফাইনালে দলকে তুলেছেন প্রায় একার হাতে। সাতবারের চ্যাম্পিয়নদের বিপক্ষে প্রতিকূল অবস্থায় দুর্দান্ত সেঞ্চুরি করে জেমাইমা এখন আলোচনার কেন্দ্রে।
কিন্তু মাত্র এক বছর আগেও তার পথ এতটা মসৃণ ছিল না। বাবাকে ঘিরে ধর্মীয় বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন তিনি নিজেও। সেই বিতর্কের জেরে মুম্বাইয়ের খার জিমখানা ক্লাবের সদস্যপদ বাতিল করা হয় তার বাবা ইভান রদ্রিগেজের।
বিতর্কের সূত্রপাত
ঘটনাটি শুরু হয়েছিল গত বছরের অক্টোবর মাসে, খার জিমখানার বার্ষিক সাধারণ সভার সময়।
ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, ইভান রডরিগেজ প্রায় ১৮ মাসের মধ্যে ব্রাদার ম্যানুয়েল মিনিস্ট্রিজ-এর সঙ্গে যুক্ত হয়ে প্রায় ৩৫টি সভার আয়োজন করেছিলেন।
অভিযোগ ওঠে, এসব সভায় ধর্মীয় কার্যক্রম পরিচালিত হতো- যা ক্লাবের নিয়ম অনুযায়ী নিষিদ্ধ, কারণ সেখানে রাজনৈতিক বা ধর্মীয় কোনো অনুষ্ঠান আয়োজনের অনুমতি নেই।

ক্লাবের কমিটি সদস্য শিব মালহোত্রা বলেন, এখানে এমন অনুষ্ঠান হচ্ছিল যা সত্যিই অবাক করার মতো। দেশের অন্য জায়গায় এমন ঘটনার খবর পাওয়া যায়, কিন্তু আমাদের ক্লাবের ভেতরে এমন কিছু হচ্ছে দেখে উদ্বেগজনক লেগেছে।
এক পর্যায়ে এক কর্মচারী প্রাক্তন সভাপতি নিতিন গাদেকরকে বিষয়টি জানালে, ক্লাব কর্তৃপক্ষ আনুষ্ঠানিক পদক্ষেপ নেয় এবং ভোটাভুটির মাধ্যমে রদ্রিরিগেজ পরিবারের সদস্যপদ বাতিলের সিদ্ধান্ত হয়।
প্রতিকূলতা পেরিয়ে প্রত্যাবর্তন
এক বছর পর সেই বিতর্কের ছায়া কাটিয়ে জেমাইমা রচনা করেন এক অবিশ্বাস্য প্রত্যাবর্তনের গল্প। মানসিক চাপ ও উদ্বেগের বিরুদ্ধে লড়ে তিনি অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সেমিফাইনালে খেলেন অপরাজিত ১২৭ রানের ইনিংস- যা ভারতের নারী ওয়ানডে ইতিহাসে সর্বোচ্চ সফল রান তাড়ার রেকর্ড।
১৪টি বাউন্ডারিতে সাজানো সেই ইনিংসের পর ম্যাচ সেরা নির্বাচিত হন জেমাইমা। পুরস্কার গ্রহণের পর তিনি বলেন, এই সফরে আমি প্রায় প্রতিদিন কেঁদেছি। মানসিকভাবে ভালো অবস্থায় ছিলাম না, উদ্বেগে ভুগছিলাম। কিন্তু জানতাম, মাঠে আমাকে নিজের সেরাটা দিতে হবে। বাকিটা ঈশ্বর নিজেই সামলে নিয়েছেন।
এটি ছিল তার ওয়ানডে ক্যারিয়ারের তৃতীয় শতরান। এটি শুধু এক ম্যাচ নয়, তার ব্যক্তিগত লড়াই ও আত্মবিশ্বাসের জয়ও বটে।
ক্রিফোস্পোর্টস/১নভেম্বর২৫/এনজি