
বল পায়ে রীতিমতো উড়ছে লাল-সবুজের বাংলাদেশ। ঋতুপর্ণা-আফিদাদের দাপটে কাবু হচ্ছে একের পর এক প্রতিপক্ষ। এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বে বাহরাইনকে ৭-০ গোলে হারানোর পর তুর্কমেনিস্তানকেও একই ব্যবধানে পরাজিত করেছে বাংলাদেশ। এর আগে ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে ৭৩ ধাপ এগিয়ে থাকা মিয়ানমারকে তাদেরই মাঠে ২-১ গোলে হারিয়ে সগৌরবে জায়গা করে নেয় এশিয়ান কাপের মূলপর্বে। সবমিলিয়ে মাত্র তিন ম্যাচে প্রতিপক্ষের জালে ১৬টি গোল দিয়েছে বাংলাদেশ, বিপরীতে হজম করেছে মাত্র একটি। ইতিহাস গড়ে এশিয়ান কাপে নাম লেখানোর পর বাংলাদেশের সামনে এখন উঁকি দিচ্ছে বিশ্বকাপ খেলার স্বপ্ন।
বিশ্বকাপ মানেই রোমাঞ্চ
ফিফা বিশ্বকাপ- নামটাই যেন আলাদা উত্তেজনা তৈরি করে। এই টুর্নামেন্ট মানেই বাংলাদেশের ফুটবলপ্রেমীদের কাছে ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা কিংবা স্পেন-জার্মানির দাপুটে ফুটবল। বিশ্বকাপ এলেই দেশের আনাচে-কানাচে উড়তে থাকে বিদেশি পতাকা। কিন্তু যদি বিশ্বকাপের মঞ্চে একদিন বাজে “আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি”—তবে কেমন হবে অনুভূতিটা? সেই স্বপ্ন এখন আর দূরের নয়।
আরও পড়ুন :
» ইতিহাস গড়া ঋতুপর্ণারা দেশে ফিরবেন আজ, হাতিরঝিলে সংবর্ধনা
» নাটকীয় ম্যাচ জিতে সেমিতে রিয়াল, প্রতিপক্ষ পিএসজি
বিশ্বকাপের বাছাইপর্ব মূলত এশিয়ান কাপ
২০২৭ সালে নারী বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হবে ব্রাজিলে, যেখানে অংশ নেবে ছয় মহাদেশ থেকে ৩২টি দল। এশিয়া অঞ্চল থেকে অন্তত ৮টি দল পাবে বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ। এই বাছাই হবে ২০২৬ সালে অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠেয় এএফসি নারী এশিয়ান কাপের মাধ্যমে। ইতোমধ্যে এশিয়ান কাপের চূড়ান্তপর্বে জায়গা করে নিয়েছে বাংলাদেশ, যার অর্থ—বিশ্বকাপের পথে এক ধাপ এগিয়ে গেছে তারা।
এশিয়ান কাপে থাকবে তিনটি গ্রুপ, প্রতিটিতে ৪টি করে দল। সেমিফাইনালে ওঠা চার দল সরাসরি জায়গা করে নেবে বিশ্বকাপে। কোয়ার্টার ফাইনালে হারা চার দলের মধ্যে হবে দুটি প্লে-ইন ম্যাচ, যার দুই বিজয়ী পাবে বাকি দুটি টিকিট। পরাজিত দুই দল পাবে আন্তঃমহাদেশীয় প্লে-অফে খেলার সুযোগ। সবমিলিয়ে মোট ৮টি এশিয়ান দল যাবে ব্রাজিল বিশ্বকাপে।
অলিম্পিকেও খেলার সুযোগ
বিশ্বকাপের পাশাপাশি এশিয়ান কাপে ভালো করলেই মিলতে পারে ২০২৮ সালের লস এঞ্জেলস অলিম্পিকে খেলার সুযোগ। এশিয়ান কাপের কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠা ৮টি দলই অংশ নেবে অলিম্পিক বাছাইপর্বে। সেখানে দুটি গ্রুপে ভাগ হয়ে দলগুলো লড়বে অলিম্পিকে জায়গা পাওয়ার জন্য। প্রতি গ্রুপ থেকে শীর্ষ দল পাবে অলিম্পিকের টিকিট।
স্বপ্ন বুনছেন ঋতুপর্ণারা
সবমিলিয়ে বলা যায়, ঋতুপর্ণা-আফিদারাই এখন দেশের ফুটবলের সবচেয়ে বড় স্বপ্নচারিণী। স্মরণকালের সবচেয়ে বড় সুযোগের সামনে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ, যার মূল মঞ্চ হতে পারে এই একটি এশিয়ান কাপ। কয়েক বছর আগেও যা ছিল কেবল রূপকথা, এখন তা বাস্তব। হামজা-জামালদের আগেই হয়তো প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের মঞ্চে পা রাখতে চলেছে মনিকা-ঋতুপর্ণারা। সেটি ঘটলে তা নিঃসন্দেহে হয়ে উঠবে বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনের সবচেয়ে বড় সাফল্য- যার হাত ধরে থাকবে দেশের নারী ফুটবল।
ক্রিফোস্পোর্টস/৬জুলাই২৫/টিএইচ/এসএ
