ক্রাইস্টচার্চে হওয়া নিউজিল্যান্ড–ওয়েস্ট ইন্ডিজ প্রথম টেস্টটা শুরুতে তেমন নজর কাড়েনি। অ্যাশেজ সিরিজের উত্তাপে ম্যাচটা অনেকের চোখ এড়িয়ে গিয়েছিল। কিন্তু পাঁচ দিনের শেষে এই টেস্টই হয়ে উঠল টেস্ট ক্রিকেটের নিখুঁত উদাহরণ গ্রিভসের ধৈর্য, হোপসের লড়াই, সব মিলে অবিশ্বাস্য সমাপ্তি দিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ব্যাটিং ইউনিট।
১৬৭ রানে প্রথম ইনিংস গুটিয়ে যাওয়ার পর ক্যারিবীয়দের অবস্থা ছিল একেবারে কোণঠাসা। ৫৩১ রানের টার্গেট সামনে রেখে দুই দিন টিকে থাকা তো দূরের কথা, ম্যাচটা চতুর্থ দিনেই শেষ হয়ে যাবে এমনটাই ছিল অনুমান। কিন্তু নিউজিল্যান্ডের সেই সম্ভাবনাকে ধুলোয় মিশিয়ে দিলেন জাস্টিন গ্রিভস, শাই হোপ এবং কেমার রোচরা।
দ্বিতীয় ইনিংসেই গড়ে উঠল ইতিহাস। ৬ উইকেটে ৪৫৭ টেস্ট ক্রিকেটে দ্বিতীয় ইনিংসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ। হোপ খেললেন ১৪০ রানের দায়িত্বশীল ইনিংস। যদিও প্রকৃত প্রতিরোধ পুরোটাই গড়েছেন জাস্টিন গ্রিভস। ৩৮৮ বল খেলে ২০২ রানে অপরাজিত থেকে দলকে পরাজয় থেকে রক্ষা করেন। এটা শুধু ব্যাটিং নয়, মানসিক দৃঢ়তারও এক বিশাল পরীক্ষা দিয়েছেন তারা। উইকেটের পাশে ছিলেন কেমার রোচ, যিনি ২৩৩ বল খেলে ৫৩ রানের ইনিংসে ধৈর্যের প্রমাণ করলেন টেস্ট ক্রিকেটে ‘অপ্রত্যাশিত’ বলতে সত্যিই কিছু আছে।
নিউজিল্যান্ডের মতো শক্তিশালী দলের বিপক্ষে শেষ দিন এমন চাপের ম্যাচে এতটা স্থির থাকা, ধৈর্য ধরে উইকেটে থেকে রান করা এটা শুধু রানের হিসাব নয়, তা আবারও বোঝা গেল। ম্যাচ শেষ হলো তখন, যখন ওয়েস্ট ইন্ডিজ জয় থেকে ছিল মাত্র ১০০ রানের কিছু বেশি দূরে। আরও এক ঘণ্টা খেলা হলে হয়তো ওয়েস্ট ইন্ডিজ রেকর্ড গড়ে জিতেও যেতে পারতো, তবে সেটা এখন শুধু অনুমানই।
তবু স্কোরলাইন দেখে ড্র ভাবা ছাড়া কারণ নেই, তবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ডাগআউটের প্রতিক্রিয়া বলে দেয় এটা তাদের কাছে জয়েরই সমান। ড্যারেন সামির উল্লাস, খেলোয়াড়দের জয়োৎসব সব মিলিয়ে টেস্ট ক্রিকেটের জন্য এ ছিল এক দারুণ দিন।
ক্রিফোস্পোর্টস/৬ডিসেম্বর২৫/টিএ