Connect with us
ফুটবল

যে কারণে ক্লাব বিশ্বকাপে ব্রাজিলিয়ান দলগুলো এতো ভালো খেলছে

Brazil Club CEC
ক্লাব বিশ্বকাপে চমক দেখিয়েছে ব্রাজিলের চার দল। ছবি- বিবিসি

ক্লাব বিশ্বকাপে চলছে ব্রাজিলিয়ান জাদু। চার ব্রাজিলিয়ান ক্লাবের জাদুতে কাবু ইউরোপের নামকরা ক্লাবগুলো। এবার লাতিন ক্লাবের জাদুতে কাবু হয়েছে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের রানার্সআপ ইন্টার মিলান। ক্লাব বিশ্বকাপের শেষ ষোলোতে এই ইতালিয়ান জায়ান্টকে ২-০ গোলে হারিয়েছে ব্রাজিলিয়ান ক্লাব ফ্লুমিনেন্স

ফ্লুমিনেন্সের এমন কাণ্ড ঘটানোর দিনকে মোটেও অঘটন বলা চলে না। কারণ ক্লাব বিশ্বকাপে ফ্লুমিনেন্সের যাত্রাটা আধিপত্যে ঠাসা। গ্রুপপর্বে বরুশিয়া ডর্টমুন্ডের মতো দলকেও আটকে দিয়েছিল রেনাতো গাউচের এই ফ্লুমিনেন্স।

অবশ্য শুধু ফ্লুমিনেন্স নয়, ব্রাজিলের রিওভিত্তিক ক্লাব বোটাফোগো, ফ্ল্যামেঙ্গো, এবং সাও পাওলো-ভিত্তিক পালমেইরাসও টুর্নামেন্টে ছিল দুর্দান্ত। ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপে অংশ নিয়ে ব্রাজিলের এই চার ক্লাবই শেষ ষোলো নিশ্চিত করেছিল। এর মধ্যে ফ্লুমিনেন্স ও পালমেইরাস পা রেখেছে কোয়ার্টার ফাইনালে। শেষ ষোলো থেকে বিদায় নিয়েছে বোটাফোগো ও ফ্ল্যামেঙ্গো

Botafogo

ইউরোপের চ্যাম্পিয়ন পিএসজিকে হারিয়েছে বোটাফোগো


আরও পড়ুন

» মেসি সম্পর্কে অজানা ১০ তথ্য, জানলে অবাক হবেন

» ক্লাব বিশ্বকাপের কোয়ার্টারে প্রতিপক্ষ চূড়ান্ত, কে কার মুখোমুখি?

» ২০২৭ বিশ্বকাপে সরাসরি কোয়ালিফাই করা মিরাজের টার্গেট


তবে বিদায় নিলেও টুর্নামেন্টের ‘ফেভারিট’ তকমা নিয়ে খেলতে নামা ইউরোপিয়ান ক্লাবগুলোকে ভড়কে দিয়েছে তারা। গ্রুপপর্বে বোটাফোগো হারিয়েছে ইউরোপের চ্যাম্পিয়ন প্যারিস সেন্ট-জার্মেইনকে (পিএসজি), ফ্ল্যামেঙ্গো ১-০ ব্যবধানে পিছিয়ে থেকেও চেলসিকে ৩-১ গোলে হারিয়েছে, আর ফ্লুমিনেন্স ও পালমেইরাস যথাক্রমে বরুশিয়া ডর্টমুন্ড ও পোর্তোর বিপক্ষে ড্র করেছে। এমনসব রোমাঞ্চকর আর অদ্ভুত ম্যাচের পর প্রশ্ন জাগছে কেন ক্লাব বিশ্বকাপে এতো ভালো খেলছে ব্রাজিলের দলগুলো? এর নেপথ্যে আসলে কী কী কারণ জড়িয়ে আছে?

কেন ব্রাজিলিয়ান দলগুলো এত ভালো করছে?

স্প্যানিশ জায়ান্ট অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ, পর্তুগালের পোর্তো আর প্রতিবেশী আর্জেন্টিনার দুই ক্লাব—বোকা জুনিয়র্স ও রিভার প্লেট বিদায় নিলেও গ্রুপপর্বে নজরকাড়া পারফরম্যান্স দেখিয়ে শেষ ষোলোতে জায়গা করে নেয় ব্রাজিলের চার ক্লাব। ক্লাব বিশ্বকাপে ব্রাজিলের ক্লাবগুলো ভালো খেলবে– এমনটা সবারই জানা ছিল। তবে এতো ভালো খেলবে সম্ভবত এমনটা ভাবেনি কেউই।

ব্রাজিলিয়ান ক্লাবগুলোর এমন পারফরম্যান্সের পর অনেকেই বলছে, ২০১২ সালের পর ফের ক্লাব বিশ্বকাপের শিরোপা যাবে ব্রাজিলে।

Flamingo

পিছিয়ে থেকেও চেলসিকে ৩-১ গোলে হারিয়েছে ফ্ল্যামেঙ্গো

ব্রাজিলিয়ান ক্লাবগুলো কি আবহাওয়ার বাড়তি সুবিধা পাচ্ছে?

যুক্তরাষ্ট্রের প্রচন্ড গরমে অতিষ্ঠ ইউরোপিয়ান ক্লাবগুলো। গরম নিয়ে অভিযোগ তুলেছিলেন চেলসি কোচ এনজো মারেস্কা ও ম্যানসিটি কোচ পেপ গার্দিওলা। চেলসি ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় অনুশীলন করে তাদের ৩-০ জয় এনে দেওয়া ম্যাচে ইএস তুনিসের মুখোমুখি হয়েছিল ফিলাডেলফিয়ায়। ম্যাচের পর মারেস্কা বলেছিলেন, ‘এই আবহাওয়ায় ট্রেনিং করানো বা সেশন নেওয়া প্রায় অসম্ভব।’ গার্দিওলা ম্যাচের আগেই বলেছিলেন, ‘আমার খেলোয়াড়দের প্রস্তুত থাকতে হবে কষ্ট সহ্য করার জন্য।’


আরও পড়ুন

» ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ : এক নজরে জানা-অজানা সব তথ্য

» ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপে প্রাইজমানি কত? কার কী অর্জন


অবশ্য এমন অভিযোগ মোটেও অমূলক নয়। কারণ চেলসি ও ম্যানচেস্টার সিটির মতো ক্লাবগুলো এতো গরমে খেলে অভ্যস্ত নয়। তাদের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের গরম তাই ম্যাচের বাইরেও এক বাড়তি চ্যালেঞ্জ। তবে এই গরম ইউরোপের দলগুলোর জন্য কাল হলেও ব্রাজিলিয়ান ক্লাবগুলোর জন্য যেন আশীর্বাদ। গরমের সুবিধা নিয়েই প্রতিপক্ষকে ভড়কে দিচ্ছে তারা। বোটাফোগোর রাইট-ব্যাক ভিতিনহো বলেছেন,‘আমরা তো এই গরমের সঙ্গে অভ্যস্ত। আশা করি এটা আমাদের পক্ষে কাজ করবে।’ শেষ পর্যন্ত গরমটা ঠিকই কাজে দিয়েছে৷

Palmaeris

কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করা পালমেইরাস খেলবে চেলসির বিরুদ্ধে

তাজা ফর্ম

ব্রাজিলের এই চার দল চলতি ঘরোয়া মৌসুম থেকে আলাদা হয়ে ক্লাব বিশ্বকাপে যোগ দিয়েছে। অর্থ্যাৎ ঘরোয়া লিগের পরিবর্তে ক্লাব বিশ্বকাপকেই গুরুত্ব দিচ্ছে তার। ঘরোয়া লিগে খেলার মাঝে থাকায় তুলনামূলকভাবে তাদের প্রস্তুতি ও ফিটনেসে তেমন কোনো ঘাটতি নেই। এমন তাজা ফর্ম আর ফিটনেস নিয়েই ক্লাব বিশ্বকাপে এসেছে তারা।

অন্যদিকে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, ইউরোপা লিগ এবং এর পাশপাশি ইউরোপিয়ান টপ ফাইভ লিগের দীর্ঘ এক মৌসুম শেষে বিশ্রামের সুযোগ পায়নি ইউরোপের ক্লাবগুলো। গত ১৫ জুন অ্যাতলেটিকো মাদ্রিদের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচ খেলেছিল পিএসজি। অথচ মাত্র ১৫ দিন আগেই তারা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালে ইন্টার মিলানকে ৫-০ গোলে হারিয়েছে। মাত্র ১৫ দিন পরেই তাদের খেলতে হচ্ছে ক্লাব বিশ্বকাপে মতো বড় টুর্নামেন্ট। যেখানে প্রতিটি দলে জন্য গ্রুপপর্বে রয়েছে ৩ ম্যাচ। গ্রুপপর্ব উতরে গেলে একে একে খেলতে হবে শেষ ষোলো, কোয়ার্টার ফাইনাল, সেমি ফাইনালসহ আরও অন্তত ৪ ম্যাচ৷ ফলে স্বাভাবিকভাবেই নিজেদের সেরাটা দিতে পারছে না ইউরোপিয়ান ক্লাবগুলো।

 Fluminanse

ইন্টার মিলানকে কাঁদিয়ে কোয়ার্টারে উঠেছে ফ্লুমিনেন্স

ব্রাজিল কি তাহলে ২০২৬-ফিফা বিশ্বকাপ জিতবে?

২০২৬ সালে যুক্তরাষ্ট্র-কানাডা ও মেক্সিকোতে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া আসন্ন বিশ্বকাপের প্রস্তুতির বড় মঞ্চ এই ক্লাব বিশ্বকাপ। সেই প্রস্তুতি ভালোভাবেই নিয়েছে ব্রাজিলের দলগুলো। কারণ বিশ্বকাপের বেশিরভাগ ম্যাচ হবে যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে। সেই যুক্তরাষ্ট্রে নজরকাড়া পারফরম্যান্স করেছে ব্রাজিলের ক্লাবগুলো। তাহলে ২০২৬ বিশ্বকাপে ব্রাজিল কি নিজেদের ষষ্ঠ শিরোপা ঘরে তুলতে যাচ্ছে?

 Club World Cup

এই কাপের জন্যই লড়ছে বিশ্বের শক্তিশালী ৩২টি ক্লাব।

উত্তরটা মোটেও সরল নয়, বরং অনেকটাই জটিল। কারণ ক্লাব বিশ্বকাপে উড়তে থাকা চার ক্লাবের অধিকাংশই খেলেননি ব্রাজিলের জাতীয় দলে। বর্তমানে দলে সুযোগ পাওয়ার সম্ভাবনাও ক্ষীণ। এমনকি ক্লাবগুলোর সেরা খেলোয়াড়দের অধিকাংশই আর্জেন্টিনা, প্যারাগুয়ে, কলম্বিয়া এবং অন্যান্য ল্যাতিন অঞ্চলের ফুটবলার। ব্রাজিলের জাতীয় দলের ফুটবলারদের সিংহভাগই খেলেন ইউরোপিয়ান ক্লাবে। ফলে ক্লাব বিশ্বকাপের মতো ২০২৬ বিশ্বকাপেও ব্রাজিলিয়ান জাদু দেখা যাবে– এমনটা এখনি নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।

ক্রিফোস্পোর্টস/২জুলাই২৫/টিএইচ/এজে

Crifosports announcement
Click to comment

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Focus

More in ফুটবল