ভারতীয় ক্রিকেটে দীর্ঘদিন ধরে একটা প্রচলিত ধারণা ঘুরে বেড়ায় যে, যিনি ইংরেজিতে সাবলীল, তাকেই নাকি বড় দলের নেতৃত্বের জন্য বেশি উপযোগী মনে করা হয়। কিন্তু অক্ষর প্যাটেলের মতে, এই ভাবনা যতটা জনপ্রিয়, বাস্তবতা আসলে এমন নয়। তাঁর চোখে নেতৃত্বের মানদণ্ড আসলে ভাষা নয় বরং মাঠে চিন্তার স্বচ্ছতা আর দল পরিচালনার দক্ষতা।
ইডেন গার্ডেনে আজ থেকে শুরু হওয়া দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে দুই টেস্ট সিরিজের আগে গতকাল ‘ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস’–কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে অক্ষর স্পষ্ট করে বলেন, ইংরেজি জানা বা না–জানা দিয়ে একজন ক্রিকেটারের নেতৃত্ব বা সামর্থ্য বিচার করা ঠিক নয়। ভারতের হয়ে এক যুগেরও বেশি সময় খেলা এই স্পিন–অলরাউন্ডারের ভাষায়, নেতৃত্ব আসে পরিকল্পনা, যোগাযোগ এবং সতীর্থদের বুঝে নেওয়ার ক্ষমতা থেকে। কথা বলার ভাষা সেটা নির্ধারণ করে না।
অক্ষর বলেন, মাঠের ভেতরে একজন অধিনায়কের কাজ কেবল বক্তৃতা দেওয়া নয়। তার মূল দায়িত্ব হলো সতীর্থদের শক্তিমত্তার পাশাপাশি দুর্বলতা জানা, কে কোন পরিস্থিতিতে কীভাবে পারফর্ম করতে পারে, সেই বোঝাপড়া থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া। তাঁর মতে, ‘ব্যক্তিত্ব মানেই ইংরেজিতে সাবলীলতা’ এমন ভাবনা দর্শক–সমর্থকের তৈরি ভুল ধারণা, যা বদলানো জরুরি।
তিনি আরও বলেন, এখন অনেক কিছুই নির্ভর করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কেমন পরিস্থিতি আছে, কীভাবে সেগুলো নিয়ে কথা বলা হচ্ছে, সেসবের ওপর। ফলে সাধারণ মানুষের বিচারটা ভাষা বা চেহারায় আটকে যাচ্ছে; নেতৃত্বের মূল জায়গাগুলো খেয়ালই করা হয় না।
আইপিএলে এ বছরই প্রথমবার পূর্ণকালীন অধিনায়ক হন অক্ষর। দিল্লি ক্যাপিটালস তাঁর নেতৃত্বে লিগ পর্ব শেষ করে পাঁচে থেকে, অল্পের জন্য প্লে–অফে উঠতে পারেনি। নিজের অধিনায়কত্ব নিয়ে অক্ষর জানান, তিনি চান ড্রেসিংরুম অনেক ফ্রি এবং হাসিখুশি থাকুক, তবে শৃঙ্খলাও যেন বজায় থাকে। তাঁর মতে, জয়ের জন্য যা করার প্রয়োজন সেটা আগে, আনন্দ–উচ্ছ্বাস পরে; আর খেলোয়াড়েরা যখন স্বচ্ছন্দ থাকে, তখনই সেরাটা বেরিয়ে আসে।
এদিকে সাদা বলে ভারতের নিয়মিত খেলোয়াড় হলেও টেস্ট দলে অক্ষরের সুযোগ তুলনামূলক কম। আগামীকাল শুরু হতে যাওয়া কলকাতা টেস্টের একাদশে তিনি থাকবেন কি না, তা এখনো নিশ্চিত নয়। টিম ম্যানেজমেন্ট যদি তিন স্পিনার নিয়ে মাঠে নামতে চায়, তাহলে জাদেজা, কুলদীপের পাশাপাশি ওয়াশিংটন সুন্দরের সাথে প্রতিযোগিতা করেই অক্ষরকে দলে সুযোগ পেতে হবে।
ক্রিফোস্পোর্টস/১৪নভেম্বর২৫/টিএ