
শুক্রবার ছিল না কোনো ক্রিকেট ব্যস্ততা। তবে সকাল থেকেই মিরপুর শের-ই-বাংলায় ছিল ক্রিকেটারদের আনাগোনা। একে একে তামিম ইকবাল, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের পাশাপাশি জাতীয় দলের বেশ কয়েকজন ক্রিকেটারকে বিসিবিতে আসতে দেখা যায়। মূলত বিসিবির সঙ্গে বিভিন্ন ইস্যুতে আলোচনার জন্যই এসেছিলেন ক্রিকেটাররা।
বিসিবির সঙ্গে আলোচনা শেষে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়েছিলেন ক্রিকেটাররা। এ সময় বিসিবির বিভিন্ন সিদ্ধান্তে ক্ষোভ জানান তামিম। গত কয়েক মাসে ঘটে যাওয়া ৩ ইস্যুতে সমাধানও চেয়েছেন দেশসেরা এই ওপেনার।
প্রথম ইস্যুটি ছিল তাওহীদ হৃদয়কে নিয়ে। ডিপিএলে আম্পায়ারদের সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে দুই ম্যাচ নিষিদ্ধ হয়েছিলেন তিনি। এরপর তাকে এক ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা কমিয়ে দেয় বিসিবি। পরবর্তীতে আম্পায়ার সৈকতের আপত্তিতে এক ম্যাচের যে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়েছিল সেটি পুনর্বহাল করা হয়। বিসিবির এমন সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ হয়েছেন তামিমরা।
আরও পড়ুন:
» গুরুত্বপূর্ণ জয়ের দিনে কোহলির নতুন মাইলফলক
» বিসিবির সঙ্গে সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে যা জানালেন তামিম
এ বিষয়ে তামিম বলেন, ‘তাওহীদ হৃদয়ের সঙ্গে মাঠে একটি ঘটনা ঘটে, যার পরিপ্রেক্ষিতে তাকে দুই ম্যাচের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়। তখন কেউই এ নিয়ে প্রকাশ্যে কোনো মন্তব্য করেনি। আমরা খেলোয়াড়েরাও কোনো কথা বলিনি। কিছুদিন পর দেখি ওই নিষেধাজ্ঞা দুই ম্যাচ থেকে এক ম্যাচে কমিয়ে আনা হয়েছে। সেটিও ছিল বিসিবির সিদ্ধান্ত। তখনো আমরা কিছু বলিনি। গতকাল আবার নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। কোন নিয়মে এটা হলো, কীভাবে হলো, তা আমার জানা নেই। এটা অত্যন্ত হাস্যকর এবং কোনোভাবেই এই ধরনের নিষেধাজ্ঞা মেনে নেওয়া যেতে পারে না।’
দ্বিতীয়টি ছিল ডিপিএলের ফিক্সিং ইস্যু। এই ইস্যুতেও বিসিবির সঙ্গে আলোচনা হয়েছে ক্রিকেটারদের। এ বিষয়ে তামিম বলেন, ‘কিছু দিন আগে গুলশান ও শাইনপুকুরের মধ্যকার ম্যাচে একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে। আমরা বোর্ডকে স্পষ্টভাবে জানিয়েছি, সেখানে যদি কোনো দুর্নীতি হয়ে থাকে কিংবা কোনো খেলোয়াড় এর সঙ্গে জড়িত থাকে, তাহলে সবাই চাই যে দোষীদের উপযুক্ত শাস্তি দেওয়া হোক। এ বিষয়ে আমরা সবাই একমত।’
‘কিন্তু এর মানে এই নয় যে, দুজন খেলোয়াড়কে সামনে এনে মিডিয়ার সামনে অভিনয় করাবেন। বিশ্বের কোনো অ্যান্টি-করাপশন নিয়ম বা নীতিমালায় এমন নিয়ম নেই। একজন খেলোয়াড়কে এভাবে প্রকাশ্যে হেয় করা ক্রিকেটারদের জন্য অসম্মানের। আমরা এই আচরণে মোটেই সন্তুষ্ট নই।’- তিনি যোগ করেন।
তৃতীয়টি ছিল বিপিএলের ফিক্সিং ইস্যু। বিপিএলে ফিক্সিং ইস্যুতে ক্রিকেটাররা দোষী প্রমাণিত হওয়ার আগেই নাম প্রকাশ্যে আনাতে ক্রিকেটাররা ক্ষুব্ধ ছিলেন বলে জানিয়েছেন তামিম। তিনি বলেন, ‘বিপিএলে ফিক্সিং নিয়ে একটা ঘটনা ঘটেছে। বিসিবির ভেতর থেকে ১০ জনের নাম ফাঁস হয়েছ এবং তাদের ছবি দিয়েছে বিভিন্ন মিডিয়াতে। ওখান থেকে কেউ যদি সত্যিই দোষী হয়, আমরা সব ক্রিকেটাররা চাই ওর শাস্তি হোক। কিন্তু এখান থেকে যদি কেউ নির্দোষ হয়? এভাবে নাম প্রকাশ করা ক্রিকেটারদের প্রতি অসম্মান। এই বিষয়গুলো নিয়ে সবাই বেশ উদ্বিগ্ন ছিলাম।’
উপরের এই বিষয়গুলোর দ্রুত সমাধান চেয়ে বিসিবিকে তাগিদ দিয়েছেন তামিম, ‘আজকের আলোচনায় বোর্ড প্রেসিডেন্টসহ আরও ২ জন বোর্ড পরিচালক ছিলেন। লম্বা সময় ধরে আলোচনা হয়েছে। দ্রুত সিদ্ধান্ত নিয়ে আমাদের জানাতে বলেছি। যেহেতু কাল খেলা আছে, আমার মনে হয় খুব দ্রুতই সিদ্ধান্ত জানাবে বোর্ড।’
ক্রিফোস্পোর্টস/২৫এপ্রিল২৫/বিটি
