
গতকাল (৯ অক্টোবর) এশিয়া কাপের বাছাইপর্বে নিজেদের টিকিয়ে রাখার লড়াইয়ে ব্যর্থ হয়েছে বাংলাদেশ ফুটবল দল। হতাশ হয়ে ঘরে ফিরেছে হাজারো দর্শক, হতাশা প্রকাশ পেয়েছে হামজা, ফাহমিদুলের মুখেও। ম্যাচ শেষে পরাজয়ের কারণ খুঁজতে খুঁজতে স্টেডিয়াম ছেড়েছেন দর্শক। এভাবেও হার মানা যায়!
ম্যাচের শেষ মিনিটে গোল হজম করে মাঠ ছাড়তে থাকা হামজা, মোরছালিন, ফাহমিদুলদের চোখে ফুটে উঠেছে হতাশা, ভেসে উঠেছে আশাভঙ্গের কষ্ট। কিন্তু এই হারের কারণ কী?
রক্ষণভাগের নিরাপত্তাহীনতা ম্যাচ হারের অন্যতম কারণ। সেন্ট্রাল ডিফেন্সে থাকা তারিক কাজী সম্পূর্ণ ফিট নন। রক্ষণভাগের আরেকজন সিনিয়র তপু সম্পূর্ণ আনফিট। তারিকের সঙ্গে ছিলেন অনভিজ্ঞ শাকিল আহাদ তপু। রক্ষণভাগের যেখানে এমন দুর্দশা, সেখানে প্রতিপক্ষের আক্রমণ করা আরও সহজ হয়ে যায়। রক্ষণভাগকে সুরক্ষিত রাখতে কোচ ইয়াসিনকে নামাতে পারতেন, যেহেতু গুরুত্বপূর্ণ দু’জন ডিফেন্ডারই কোটা–আক্রান্ত। কিন্তু কোচ সেটা করেননি। হংকংয়ের মতো শক্তিশালী দলের সঙ্গে খেলতে সেন্ট্রাল ডিফেন্সে বিকল্প খেলোয়াড় হাতে রাখা উচিত ছিল কোচের।
বাড়তি নবম মিনিটে নাটকীয়ভাবে ৩–৩ গোলে বাংলাদেশ সমতায় ফেরে। সমতায় ফিরে কোচ এমনভাবে উদযাপন করেন, যেন ম্যাচ জিতে নিয়েছেন। অথচ খেলা তখনও বাকি। ম্যাচের শেষ মিনিটে কী করতে হবে, কিভাবে প্রতিপক্ষকে আটকাতে হবে—সে বিষয়ে কোনো দিকনির্দেশনা ছিল না খেলোয়াড়দের জন্য। যার ফলে শেষ মুহূর্তের আক্রমণে গোল হজম করতে হয় বাংলাদেশকে।
হংকংয়ের বিপক্ষে এশিয়া কাপের চূড়ান্ত পর্বে টিকে থাকার লড়াইয়ে প্রশ্নবিদ্ধ একাদশ মাঠে নামান কোচ হাবিয়েল কাবরেরা। চাইলে একাদশ আরও ভালো করা যেত। শমিত সোম সুদূর কানাডা থেকে খেলতে এসেছেন, অথচ তাকে ম্যাচের শুরুতে নামানো হলো না। শমিতকে একাদশে রেখে প্রয়োজনে তাকে পরিবর্তন করা যেত। কিন্তু কোচ আগেই বলেছেন, শমিতকে শুরুতে দেবেন না। বদলি নেমে শমিত যেভাবে খেলেছেন এবং গোল করেছেন, তা দেখে বোঝা যায়—শমিত একাদশে শুরু থেকেই ভালো খেলতে পারতেন। কিন্তু কোচ বলেছেন, চোটের কারণে শমিত দুই মাস ফুটবলে ছিলেন না। বিকল্প থাকলে ভিন্ন কথা, তবে যেহেতু বিকল্প ছিল না, সেহেতু এত গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে শমিতের মতো খেলোয়াড়কে বেঞ্চে বসিয়ে রাখার কোনো অর্থ হয় না।
অনূর্ধ্ব–২৩ দলে ভালো খেলার জন্য জাতীয় দলে জায়গা পেয়েছেন শেখ মোরছালিন ও জায়ান আহমেদ। তবে কোচ মোরছালিনকে শুরু থেকে একাদশে রাখলেও রাখেননি জায়ানকে। এখানে একটা প্রশ্ন থেকেই যায়। পরবর্তীতে সাদের পরিবর্তে জায়ান নেমে দেখিয়ে দেন—কোচের সিদ্ধান্ত ভুল ছিল। শুরু থেকে সুযোগ পেলে সাদের জায়গায় জায়ান আরও কার্যকর হতে পারতেন।
দুই সোহেলকে দিয়ে মাঝমাঠে খেলিয়েছেন কোচ। তবে ম্যাচে তাদের প্রভাব তেমন চোখে পড়েনি। সিনিয়র সোহেল অনেক দিন ধরে খেললেও উল্লেখযোগ্য কোনো প্রভাব ফেলতে পারেননি ম্যাচে। একাদশে এমন অসঙ্গতিই বলে দিচ্ছে—ম্যাচের একাদশ নির্বাচন ঠিক ছিল না।
ক্রিফোস্পোর্টস/১০অক্টোবর২৫/এনজি
