
বাংলাদেশ দলে একটা লেগ স্পিনারের অভাব ছিল অনেক আগে থেকেই। অতীতে যেসব লেগ স্পিনাররা জাতীয় দলে সুযোগ পেয়েছিলেন, তারা বেশিদিন দলে থিতু হতে পারেননি। তবে এই লেগ স্পিনারের ঘাটতি পূরণ করে বাংলাদেশ দলে আশার আলো হয়ে এসেছেন রিশাদ হোসেন। দুই বছর ধরে জাতীয় দলের হয়ে নিয়মিত খেলছেন এই লেগি।
বর্তমানে বাংলাদেশের স্পিন বিভাগে অন্যতম ভরসার নাম রিশাদ। ম্যাচে গুরুত্বপূর্ণ সময়ে উইকেট নিয়ে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিতে সক্ষম এই লেগি। ইতোমধ্যে বাংলাদেশকে বেশকিছু ম্যাচ জেতাতে ভূমিকা রেখেছেন রিশাদ। তাই দিনে দিনে জাতীয় দলে তার চাহিদা আরো বাড়ছে।
চলমান ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতেই বল হাতে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন রিশাদ। একাই উন্ডিজ ব্যাটারদের ৬ উইকেট নিয়ে স্বল্প পুঁজির ম্যাচেও বাংলাদেশকে বড় জয় এনে দিতে ভূমিকা রাখেন এই লেগি। রেকর্ডগড়া এই বোলিংয়ের পর নতুন করে সকলের প্রশংসায় ভাসছেন উঠতি এই তারকা।
তবে রিশাদের ভালো বোলার হয়ে ওঠার পেছনের গল্পটা মোটেও সহজ নয়৷ এর পেছনে বড় অবদান রয়েছে জাতীয় দলের সাবেক দুই নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নু ও হাবিবুল বাশার সুমনের। ঘরোয়া ক্রিকেটে যখন লেগস্পিনারদের চাহিদা অনেক কম, তখন তারাই রিশাদকে পরিচর্যার মধ্যে রেখেছিলেন। যার সুবাধে আজকের এই রিশাদ তৈরি হয়েছেন।
ন্নানু নিজেই সংবাদমাধ্যমকে জানান এই সংগ্রামের গল্প। তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশে লেগস্পিন নিয়ে একটা সংস্কৃতি আছে। আমরা লেগিদের কাছে তাৎক্ষণিক পারফরম্যান্স চাই। তবে তাদেরকে সময় দিতে হয়, সেটা আমরা সবাই জানি। কিন্তু দেশের ক্লাবগুলোতে এ ধরনের সাপোর্ট আমরা পাই না।’
‘প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট, প্রথম ডিভিশন ক্রিকেট, যা-ই বলেন, সব জায়গায় এই ধরনের চর্চা চলতে থাকে (লেগস্পিনারদের মূল্যায়ন না করা)। এসব কারণে লেগস্পিনার বের করে আনা অনেক কঠিন কাজ ছিল। প্রথম দিকে লিখনকে (জুবায়ের হোসেন) দেখেছিলাম, এরপর এসেছিল আমিনুল ইসলাম বিপ্লব। আর এখন আসলো রিশাদ। সবকিছু মিলিয়ে এই লেগস্পিনারদের আনার পেছনে অনেক সংগ্রাম করতে হয়েছে।’—নান্নু যোগ করেন।
জাতীয় দলে অভিষেকের পর রিশাদের শুরুটাও আশানুরূপ ছিল না। তবে তাকে সময় দিয়েছে টিম ম্যানেজমেন্ট। আর তাতেই মিলেছে ফল। বর্তমানে তিনি জাতীয় দলের নিয়মিত খেলোয়াড়। তাছাড়া বিশ্ব ক্রিকেটেও বেশ পরিচিত মুখ রিশাদ। গত এক বছর ধরেই ফ্রাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টগুলোতে বেশ সাড়া পাচ্ছেন এই লেগি। চলতি বছর খেলে এসেছেন পিএসএলে। বছরের শেষদিকে অস্ট্রেলিয়ার বিগ ব্যাশ লিগেও খেলতে যাবেন এই লেগি।
ক্রিফোস্পোর্টস/১৯অক্টোবর২৫/বিটি
