বিএনপি চেয়ারপার্সন ও তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া মারা গেছেন। মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) ভোর ৬টায় রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি ইন্তেকাল করেন। তার মৃত্যুতে ক্রীড়াঙ্গনে বইছে গভীর শোকের ছায়া। কেননা ক্রীড়া জগতে তার অবদান অনস্বীকার্য। তার এই শূন্যতা বাংলাদেশ ক্রীড়াঙ্গনের জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি।
বেগম খালেদা জিয়ার শাসনামলে বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গন ছিল অনেকটা দলীয় প্রভাবমুক্ত। তখন দল-মত নির্বিশেষে যেসব ক্রীড়া সংগঠকদের দ্বারা দেশের খেলাধুলার উন্নতি হবে তারাই দায়িত্ব পেয়ে কাজ করতে পেরেছেন। খেলাধুলার প্রসারে নীতিগত সমর্থন, ক্রীড়া অবকাঠামো উন্নয়নে তার বিশেষ ভূমিকা ছিল।
বিশেষ করে তার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকো ছিলেন একজন ক্রীড়াপ্রেমী মানুষ। রাজনৈতিক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেও যিনি ছিলেন ক্রীড়ামোদী মানুষ। তার অবদান বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনে ব্যাপক প্রভাব রাখে।
আরাফাত রহমান কোকো ২০০২-২০০৫ সালে বিসিবি’র গেমস ডেভেলপমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে তিনি ক্রিকেটের পেশাদার ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করেন এবং হাই-পারফরম্যান্স ইউনিট গঠন করেন, যা প্রতিভাবান খেলোয়াড় তৈরিতে সহায়ক হয়।
মিরপুর স্টেডিয়ামকে আধুনিকীকরণ (ড্রেনেজ ও গ্যালারি) করেন এবং দেশের অন্যান্য জেলা (সিলেট, খুলনা, বগুড়া) ও রাজশাহীতে আন্তর্জাতিক মানের স্টেডিয়াম তৈরির পরিকল্পনা করেন, যা ক্রিকেটের বিকেন্দ্রীকরণে সহায়ক ছিল।
তাঁর সময়ে ডিওএইচএস ক্লাবে খেলে তামিম ইকবালের মতো তরুণ খেলোয়াড়রা নিজেদের প্রমাণ করার সুযোগ পান এবং শক্তিশালী আন্ডার-১৯ দল গঠন হয়।
ডিওএইচএস ও সিটি ক্লাবের মতো ক্লাবকে সমর্থন করেন এবং কর্পোরেট টি-টোয়েন্টি লীগের ধারণা দেন, যা বিপিএল-এর ভিত্তি স্থাপন করে। তিনি ব্যবসায়ীদের ক্রিকেটে বিনিয়োগে উৎসাহিত করেন।
ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার (সিএ) সাথে সুসম্পর্ক স্থাপন করে বাংলাদেশকে অস্ট্রেলিয়ায় প্রথম দ্বিপাক্ষিক সিরিজ খেলতে সাহায্য করেন।
২০০০ সালের দিকে তিনি একটি ফুটবল ক্লাব প্রতিষ্ঠা করে স্থানীয় যুবকদের মধ্যে ফুটবলের জনপ্রিয়তা বাড়াতে ভূমিকা রাখেন। তিনি বিশ্বাস করতেন খেলাধুলা তরুণদের উন্নতি ও নেতৃত্বের গুণাবলী বিকাশে সহায়ক, তাই নদী, হাওড়, মাঠ ও স্কেটিং রিং-এর মতো স্থানে খেলাধুলার সুযোগ তৈরি করতে চেয়েছিলেন।
শুধু তাই নয়, সাবেক প্রেসিডেন্ট শহীদ জিয়াউর রহমান থেকে শুরু করে তাঁর বড় ছেলে তারেক রহমানও খেলাধুলার উন্নতিতে সবসময়ই কাজ করেছেন। সর্বোপরি জিয়া পরিবারের প্রত্যেকটি সদস্য দেশের ক্রীড়াঙ্গনের দিকে আলাদা নজর দিয়েছেন। তাই বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যু দেশের ক্রীড়াঙ্গনে এক আলাদা শূন্যতা তৈরি করল।
ক্রিফোস্পোর্টস/৩০ডিসেম্বর২৫/টিএ
