
চলছে ক্লাব বিশ্বকাপের মহারণ। যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে বল পায়ে দাপট দেখাচ্ছে ব্রাজিলিয়ান ক্লাবগুলো, গরমে কাবু হচ্ছে ইউরোপের নামজাদা ক্লাবগুলো। অন্যদিকে লিওনেল মেসির পায়ের জাদুতে স্বপ্ন দেখছে ইন্টার মায়ামি আর হোঁচট খেয়েও ঘুরে দাঁড়িয়েছে রিয়াল মাদ্রিদ। সবমিলিয়ে মাঠের ফুটবলে এক হাড্ডাহাড্ডি লড়াই দেখে ফুটবল বিশ্ব। তবে লড়াইয়ের পাশাপাশি টুর্নামেন্টে অংশ নেওয়া ক্লাবগুলোর জন্য উঁকি দিচ্ছে মোটা অঙ্কের প্রাইজমানিও।
বিশ্বের ছয় মহাদেশের ৩২ ক্লাবকে নিয়ে সাজানো এই টুর্নামেন্টের জন্য মোটা অঙ্কের প্রাইজমানি ঘোষণা দিয়ে রেখেছে ফিফা। এমনকি অর্থের পরিমাণটা ২০২২ কাতার বিশ্বকাপকেও ছাড়িয়ে গেছে। ক্লাব বিশ্বকাপের জন্য প্রাইজমানি ধরা হয়েছে ১০০ কোটি ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ১২ হাজার ১৫৭ কোটি ২৬ লাখ টাকা। ২০২২ কাতার বিশ্বকাপে ছিল মাত্র ৪৪ কোটি ডলার। অর্থাৎ কাতার বিশ্বকাপের দ্বিগুণেরও বেশি প্রাইজমানি ক্লাব বিশ্বকাপের জন্য বরাদ্দ করেছে ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি।
ফিফা এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, এই টুর্নামেন্ট থেকে যে পরিমাণ অর্থ আয় হবে, তার সবটাই ভাগ করে দেওয়া হবে অংশ নেওয়া ক্লাবগুলোর মধ্যে। ফিফা একটি ডলারও নিজেদের জন্য রাখবে না। টুর্নামেন্টে অংশ নেওয়া সব ক্লাবের জন্যই প্রাইজমানি থাকবে। এ ছাড়াও ফলাফলের ওপর ভিত্তি করে দেওয়া হবে পারফরম্যান্স ফি।
আরও পড়ুন
» এমএলএস বেতনের শীর্ষে আবারও সেই মেসি
» ১৮ বছর বয়সেই না ফেরার দেশে আর্জেন্টাইন ফুটবলার
» উইকেটের পেছনে নতুন রেকর্ড গড়লেন লিটন দাস
৩২ দলের মধ্যে গ্রুপপর্বে অংশ নেওয়া দলগুলো প্রতিটি জয়ের জন্য পাবে ২০ লাখ ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা ২৪ কোটি ৩০ লাখ টাকা। ম্যাচ ড্র হলে দুই দল সমানভাবে ভাগ করে নেবে ১২ কোটি ১৫ লাখ টাকা। শেষ ষোলো পর্বে জয় পাওয়া আট দলের অ্যাকাউন্টে ঢুকবে ৭৫ লাখ ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ ৯১ কোটি ১৭ লাখ টাকা।
কোয়ার্টার ফাইনালে জয়ী চার ক্লাব পাবে ১ কোটি ৩১ লাখ ২৫ হাজার ডলার করে, বাংলাদেশি টাকায় এটি ৫৯ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। সেমিফাইনালে জয়ী দুই দলের পকেটে ঢুকবে ২ কোটি ১০ লাখ ডলার, বাংলাদেশি মুদ্রায় যা ২৫৫ কোটি ৩০ লাখ টাকা। রানার্সআপ হওয়া দলের জন্য থাকছে ৩ কোটি ডলার, বাংলাদেশি মুদ্রায় যা ৩৬৪ কোটি ৭১ লাখ টাকা। ১৪ জুলাই ইস্ট রাদারফোর্ডের মেটলাইফ স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ফাইনালে শিরোপা উঁচিয়ে ধরা ক্লাবের জন্য থাকছে ৪ কোটি ডলার। বাংলাদেশি টাকায় এর পরিমাণ প্রায় ৪৮৬ কোটি ২৯ লাখ টাকা। যা ২০২২ সালে কাতার বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন হওয়া আর্জেন্টিনার চেয়েও বেশি।
শুধু তাই নয়, টুর্নামেন্টে অংশ নেওয়ার জন্যও মোটা অঙ্কের টাকা পাচ্ছে ক্লাবগুলো। শীর্ষ র্যাঙ্কিংধারী ইউরোপীয় ক্লাব টুর্নামেন্টে অংশ নিয়ে পাবে ৩ কোটি ৮১ লাখ ৯০ হাজার ডলার, বাংলাদেশি মুদ্রায় ৪৬৪ কোটি ২৮ লাখ টাকা। দক্ষিণ আমেরিকার ক্লাবগুলোর জন্য থাকছে ১৮৪.৯১ কোটি টাকা। উত্তর, মধ্য আমেরিকা ও ক্যারিবীয় অঞ্চলের ক্লাবগুলোর অ্যাকাউন্টে যাবে ১১৬.১০ কোটি টাকা। একই পরিমাণ অর্থ পাবে এশিয়া ও আফ্রিকার ক্লাবগুলো। ওশেনিয়া মহাদেশের একমাত্র প্রতিনিধি হিসেবে অকল্যান্ড সিটি পাবে সর্বনিম্ন ৩৫ লাখ ৮০ হাজার ডলার, বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ ৪৩ কোটি ৫২ লাখ টাকা।
বিশ্বকাপের মতো ক্লাব বিশ্বকাপকে জনপ্রিয় করে তোলার জন্যই এমন উদ্যোগ ফিফার। একই সঙ্গে ইউরোপিয়ান ক্লাবগুলোর অংশগ্রহণে টুর্নামেন্টকে আরও জনপ্রিয় করে তুলতেই এমন টাকার হাঁড়ি নিয়ে নেমেছে ফিফা।
তবে শুধু পুরুষদের নয়, আগামী বছর থেকে ১৬ দল নিয়ে নারী ক্লাব বিশ্বকাপও আয়োজন করতে যাচ্ছে ফিফা। প্রতি চার বছর পর পর অনুষ্ঠিত হবে এই টুর্নামেন্ট। নতুন এই টুর্নামেন্টে উয়েফা উইমেনস চ্যাম্পিয়নস লিগের দলগুলো ও যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল উইমেনস সকার লিগের দলগুলোর পাশাপাশি মেয়েদের খেলা কম বিকশিত হওয়া দেশে থাকা ক্লাবগুলো মুখোমুখি হতে পারে। তবে এটি এখনো চূড়ান্ত হয়নি। আগামী বছরের জানুয়ারি থেকে ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত হতে পারে এই টুর্নামেন্ট। এর আগেই সবকিছু চূড়ান্ত করবে ফিফা।
ক্রিফোস্পোর্টস/২৬জুন২৫/টিএইচ/এসএ
