২০২০ সালে অনূর্ধ্ব–১৯ বিশ্বকাপ জয়ের সেই ঐতিহাসিক দলে ছিলেন শাহীন আলম। বয়সভিত্তিক ক্রিকেটে সম্ভাবনাময় এক পেসার হিসেবে যাত্রা শুরু করলেও সময়ের ব্যবধানে আজ বাস্তবতার কঠিন চাপে পড়েছেন তিনি। ইনজুরি, পারিবারিক অসুস্থতা আর অর্থনৈতিক সংকট সব মিলিয়ে ক্রিকেট থেকে প্রায় ছিটকে যাওয়ার পথে দাঁড়িয়ে ছিলেন যুব বিশ্বকাপজয়ী এই ক্রিকেটার।
দীর্ঘ দুই বছর ইনজুরির কারণে মাঠের বাইরে থাকতে হয়েছে শাহীনকে। সুস্থ হয়ে ফেরার চেষ্টা করলেও প্রথম বিভাগ ক্রিকেটে ক্লাব সংকট ও লিগ বর্জনের কারণে আর মাঠে নামা হয়নি। এর মধ্যেই বাবা–মায়ের অসুস্থতা এবং সংসারের দায় তাকে মানসিকভাবে ভেঙে দেয়। সহায়তার জন্য একাধিকবার বিসিবি ও জাতীয় ক্রীড়াসেবী কল্যাণ ফাউন্ডেশনের দ্বারস্থ হলেও সাড়া পাননি বলে জানান তিনি।
তবে একেবারে একা নন শাহীন। সংকটের এই সময়ে তার পাশে দাঁড়াতে শুরু করেছেন সাবেক সতীর্থরা। যুব বিশ্বকাপজয়ী দলের অধিনায়ক আকবর আলীর নেতৃত্বে একটি উদ্যোগ নেওয়ার কথা জানা গেছে। পাশাপাশি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডও বিষয়টি নতুন করে গুরুত্ব দিয়ে দেখছে।
গণমাধ্যমে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে শাহীন আলম বলেন, ইনজুরি থেকে ফিরতে এবং বাবা–মায়ের চিকিৎসা করাতে গিয়ে তার সঞ্চয় শেষ হয়ে গেছে। বিকেএসপিতে অনার্সে পড়াশোনা চালানো, অনুশীলনের খরচ আর পরিবারের দায়িত্ব সবকিছু একসঙ্গে সামলাতে গিয়ে তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন। পরিবারের পক্ষ থেকেও ক্রিকেট ছেড়ে অন্য পেশায় যাওয়ার চাপ আছে বলে জানান তিনি।
শাহীনকে নিয়ে ভাবনার কথা স্বীকার করেছেন বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের চেয়ারম্যান নাজমুল আবেদিন ফাহিম। তার মতে, বোর্ড এমন সমাধান খুঁজতে চায় যাতে শুধু আর্থিক সহায়তাই নয়, শাহীনের ক্রিকেটীয় ভবিষ্যৎও বাঁচে।
২০২০ সালের সেই অনূর্ধ্ব–১৯ দলে শাহীনের সতীর্থ ছিলেন শরিফুল ইসলাম, তাওহীদ হৃদয়, শামীম হোসেন, পারভেজ ইমন, তানজিদ হাসান তামিম, তানজিম হাসান সাকিবরা। অনেকেই আজ জাতীয় দল ও নির্বাচকদের বিবেচনায় নিয়মিত নাম। সেই দলের একজন সদস্য হয়েও যেন হারিয়ে না যান শাহীন এমনটাই চান আকবর আলীরা।
অধিনায়ক আকবর আলী জানান, তারা সবাই মিলে আলোচনা করছেন, কীভাবে শাহীনের পাশে দাঁড়ানো যায় এবং তাকে আবার মাঠে ফেরানো যায়। দ্রুতই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আশাবাদও জানান তিনি।
ক্রিফোস্পোর্টস/৩১ডিসেম্বর২৫/টিএ
