
অর্থসংকট চেপে ধরেছে বাংলাদেশের ফুটবল ক্লাবগুলোকে। যার প্রমাণ মিলছে খেলোয়াড়দের একের পর এক অভিযোগে। এক বছরেরও বেশি সময় ধরে নিয়মিত বেতন না পাওয়ায় বসুন্ধরা কিংস ছেড়েছেন তারিক কাজী। দেশের ফুটবল ক্লাবগুলো নেই আগের অবস্থায়।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক রদবদলে ফুটবল থেকে নিজেদের সরিয়ে নিয়েছে শেখ জামাল ও শেখ রাসেল ফুটবল ক্লাব। গত মৌসুমে চট্টগ্রাম আবাহনীও নিজেদের সরিয়ে নিয়েছে বাংলাদেশ ফুটবল থেকে। এরপরই খারাপ হয়ে চলেছে ক্লাবগুলোর আর্থিক অবস্থা।
বসুন্ধরা কিংস ২০১৮ সাল থেকে রীতিমতো দাপট দেখিয়েছে দেশের ফুটবলে। দেখা যায়নি ক্লাবটির অর্থসংকট। সরকার পতনের পর অর্থসংকটে পড়েছে বসুন্ধরা কিংসও। বসুন্ধরা কিংসের সাবেক রোমানিয়ান কোচ এবং একজন ট্রেনার বেতন–ভাতা বকেয়ার কথা উল্লেখ করে ফিফার দরবারে অভিযোগ জানালে ক্লাবটির অবনতির বিষয়টি সামনে আসে।
মোহামেডানের কোচ আলফাজ আহমেদ ক্লাবগুলোর এমন আর্থিক দুরাবস্থা সম্পর্কে বলেন, ‘এ বছর ৯০ ভাগ খেলোয়াড় নীরবে নাম লিখিয়েছে ক্লাবে। ধরতে গেলে কোনো পেমেন্টই নেই। যে খেলোয়াড় আগে ৬০ লাখ পেয়েছে, এবার পেয়েছে ১০-১৫ লাখ। এবার মাত্র তিনজন খেলোয়াড় একটু ডিমান্ড করে দলবদল করতে পেরেছে। তিনজনকেই নিয়েছে কিংস—আবাহনী থেকে শাহরিয়ার ইমন, মোহাম্মদ হৃদয় ও রহমতগঞ্জ থেকে তাজউদ্দিন। এর বাইরে অন্য কোনো খেলোয়াড় আহামরি চুক্তি পায়নি। এ বছর আমার দৃষ্টিতে দেশের ঘরোয়া ফুটবল ইতিহাসে খেলোয়াড়দের জন্য সবচেয়ে বাজে আর্থিক অবস্থা চলছে।’
মাঝারি ক্লাবগুলোর মধ্যে ফর্টিস নিয়মিত বেতন-ভাতা দেন খেলোয়াড়দের। তাছাড়া কমবেশি সব ক্লাবই ধুঁকছে সংকটে। খেলোয়াড়েরা বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনে (বাফুফে) অভিযোগ করেছেন বেতন-ভাতা বকেয়া পরিশোধের জন্য। তবে বাফুফের কথায় কোনো গুরুত্ব দেয়নি ক্লাবগুলো। জামাল ভূঁইয়া স্পোর্টিং ক্লাবের বিপক্ষে, মামুনুল ইসলাম চট্টগ্রাম আবাহনীর বিপক্ষে, জাতীয় দলের সহকারী কোচ আল মামুন শেখ রাসেল ক্লাবের বিপক্ষে বেতন-ভাতা বকেয়া রাখায় বাফুফের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন। এছাড়াও অনেক খেলোয়াড় তাদের ক্লাবগুলোর বিপক্ষে বাফুফের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন।
কেউ ৫ লাখ, কেউ ১০ লাখ বা কেউ ২০ লাখ বা আরও বেশি বকেয়া রেখেছে ক্লাবের কাছে। নিয়মিত বেতন-ভাতা না পাওয়ায় বসুন্ধরা কিংস ছেড়ে যাচ্ছেন তারিক কাজী। বসুন্ধরা কিংসের সঙ্গে এভাবে মৌসুমের শুরুতেই সম্পর্কচ্ছেদ নিয়ে কিছু বলতে চাননি তারিক কাজী। সংবাদমাধ্যমকে শুধু বলছেন, সময়মতো সবকিছু জানাব।
তবে এ নিয়ে আনুষ্ঠানিক বক্তব্যে বেতন বকেয়ার ব্যাপারে কিছু বলেনি ক্লাবটি। তারিকের ক্লাব-ছাড়া নিয়ে ক্লাবটি বলেছে, সিদ্ধান্তটি এসেছে তারিকের পক্ষ থেকে এবং আমরা তার সিদ্ধান্তকে শ্রদ্ধা করি। ভবিষ্যতের জন্য শুভকামনা জানাই।
ক্রিফোস্পোর্টস/১৯অক্টোবর২৫/এনজি
