
বৃথা গেল বোলারদের অবদান। আরও একবার হতাশ করলো বাংলাদেশের ব্যাটাররা। আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ বাঁচানোর ম্যাচে দায়িত্বহীন ব্যাটিং করে সিরিজ খোয়ালেন জাকের-মিরাজরা। ১৯১ রানের সহজ লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে টেনেটুনে একশ রান তুলেই গুটিয়ে গেল লাল-সবুজের দল।
শনিবার (১১ অক্টোবর) আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ৮১ রানের বড় ব্যবধানে হেরেছে বাংলাদেশ। আবুধাবির জায়েদ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আগে ব্যাট করতে নেমে ১৯০ রান সংগ্রহ করে আফগানিস্তান। জবাবে ব্যাট করতে নেমে ১০৯ রানেই গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ। তাতে এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ জিতে নিয়েছে আফগানিস্তান।
শুরুতে মঞ্চ তৈরি করে দিয়েছিলেন বোলাররা। মিরাজ-রিশাদদের স্পিন ভেলকিতে কোনোমতে দুইশ’র কাছাকাছি পুঁজি পায় আফগানিস্তান। ব্যাটাররা দায়িত্ব নিয়ে খেললে সহজেই পৌঁছে যেতে পারতেন লক্ষ্যে। তবে স্বল্প রানের ম্যাচেও বড় শট খেলার প্রবণতা এবং বাজে শটের মাশুল দিতে হলো টাইগারদের।
ব্যাট হাতে আজও ব্যর্থ হয়েছেন তানজিদ তামিম। দলের রানের খাতা খোলার আগেই আজমতউল্লাহ ওমরজাইয়ের ডাক মেরে ফেরেন এই ওপেনার। দুইমাস পর জাতীয় দলের খেলায় ফিরে ছন্দের খোঁজে শান্ত। প্রথম ম্যাচটা ভালো করতে পারেননি। আজ সুযোগ ছিল দলের জন্য অবদান রাখার। তবে ভাগ্য সহায় হয়নি। রান আউটের শিকার হয়ে ৭ রান করে প্যাভিলিয়নে ফেরেন এই বাঁহাতি ব্যাটার।
ব্যাট হাতে আশা জাগিয়েছিলেন টি-টোয়েন্টিতে মাতানো সাইফ হাসান। তবে ভালো শুরু পেয়েও অপ্রোয়জনীয় শট খেলে নিজের বিপদ ডেকে আনেন এই ব্যাটার। ওমরজাইয়কে চার ও ছয় মারার পরের বলে ফের শট খেলতে গিয়ে ডিপ থার্ডম্যানে ধরা পড়েন এই ইনফর্ম ব্যাটার। ২৩ বলে ২২ রান করে বিদায় নিতে হয় তাকে। এরপর মিরাজও ৪ রানে ওমরজাইকে উইকেট দিয়ে ফেরেন।

এভাবেই আসা-যাওয়ার মধ্যে ছিলেন বাংলাদেশের ব্যাটাররা। ছবি- এসিবি
দলের ৫০ রানে ৪ উইকেট পতনের পর ম্যাচ থেকে অনেকটা ছিটকে যায় বাংলাদেশ। এরপর তাওহীদ হৃদয়, জাকের আলী ও সোহানদের দিকে তাকিয়ে ছিল দল। তবে হতাশ করেছেন তারাও। ওমরজাইয়ের পর স্পিন ভেলকি দেখান রশিদ খান। ৭৯ রানের মাথায় হৃদয়কে বোল্ড করে সাজঘরে ফেরান তিনি। ৩৪ বলে ২৪ রান করে ফেরেন তিনি।
এরপর সোহান-জাকেররা আশা জাগান কিছু সময়ের জন্য। এই জুটিতে ২০ রান যোগ করার পর রশিদ খানকে বড় শট খেলতে গিয়ে আউট হয়ে যান সোহান (১৫)। এরপর তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে লোয়ার অর্ডার। একে একে জাকের, তানজিমরা উইকেট দিয়ে ফেরেন।
আআফগানিস্তানের পক্ষে ফাইফার নেন রশিদ খান। ৮.৩ ওভারে ২ মেডেনসহ মাত্র ১৭ রান খরচায় ৫ উইকেট নেন এই স্পিনার। ৭ ওভারে ২৭ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেন আজমতউল্লাহ ওমরজাই। এছাড়া একটি উইকেট পান খারোতি।
এর আগে আফগানিস্তানের পক্ষে ১৪০ বলে ৩ চার ও ১ ছক্কায় ৯৫ রান করেন ইব্রাহিম জাদরান। তবে জাদরান ছাড়া আর কেউই ব্যাট হাতে বড় কোনো অবদান রাখতে পারেননি। ২২ রান করে অভিজ্ঞ মোহাম্মদ নবী। ১১ রান আসে রহমানউল্লাহ গুরবাজের ব্যাট থেকে। শেষদিকে ১৮ বলে ২ চার ও ১ ছক্কায় ২২ রান করেন এএম গজনফার। এছাড়া ১১ রান করে নাঙ্গেলিয়া খারোতি।
বাংলাদেশের পক্ষে আজ স্পিনাররা দারুণ করেছেন। বিশেষ করে মেহেদি হাসান মিরাজ ১০ ওভারে ১ মেডেনসহ ৪৩ রান খরচায় ৩টি উইকেট নেন। রিশাদও দারুণ করেছেন। ৯.৫ ওভারে ৩৭ রানে ২ উইকেট নেন। আরেক স্পিনার তানভীর ইসলাম ১০ ওভারে ৩৫ রান দিয়ে ১ উইকেট নেন। পেসারদের মধ্যে তানজিম সাকিব ৭ ওভারে ৩৫ রান খরচ করে ২ উইকেট নেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
আফগানিস্তান : ১৯০/৯ (৪৪.৫ ওভার)
বাংলাদেশ : ১০৯/১০ (২৮.৩ ওভার)
ফলাফল : আফগানিস্তান ৮১ রানে জয়ী
ক্রিফোস্পোর্টস/১২অক্টোবর২৫/বিটি
