প্রায় সারাদিনের বোর্ড সভা শেষে সন্ধ্যায় সংবাদ সম্মেলনে আসে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। বড় কোনো নীতিগত চমক না থাকলেও, তৃণমূল ক্রিকেট ঘিরে দুটি নতুন সিদ্ধান্তের কথা জানান বিসিবির মিডিয়া কমিটির প্রধান আমজাদ হোসেন। তার একটি সারা দেশে জেলা লিগ বিস্তৃত করা, অন্যটি আগামী এক বছরে ১০০টি নতুন উইকেট তৈরি করার পরিকল্পনা।
বিসিবির লক্ষ্য অনুযায়ী, নতুন বছরে দেশের অন্তত ৪০টি জেলায় জেলা লিগ আয়োজন করা হবে। চলতি বছরে যেখানে মাত্র ১২টি জেলায় লিগ হয়েছিল, সেখানে এই সংখ্যা কয়েক গুণ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বোর্ড। এই উদ্যোগের সঙ্গে মিলিয়ে নতুন একটি থিমও ঘোষণা করা হয়েছে ‘১০০ উইকেটস ইন ২০২৬’।
সংবাদ সম্মেলনে আমজাদ হোসেন বলেন, জেলা লিগ নিয়মিত না হলে প্রতিভা খুঁজে বের করা কঠিন হয়ে পড়ে। সে কারণেই লিগ সচল করাকে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি মাঠ ও উইকেটের সংখ্যা বাড়ানোর পরিকল্পনাও সামনে আনা হয়েছে।
উইকেট তৈরির পরিকল্পনার বিস্তারিত তুলে ধরেন বিসিবির গ্রাউন্ডস বিভাগের প্রধান খালেদ মাসুদ পাইলট। তিনি জানান, নতুন কোনো মাঠ কেনা এই প্রকল্পের অংশ নয়। বরং যে মাঠগুলো আছে সেই মাঠগুলোকেই সচল ও আধুনিক করে তোলাই মূল লক্ষ্য।
পাইলট বলেন, মাঠ ছাড়া ক্রিকেট এগোনো সম্ভব নয়। তাই ফতুল্লার ইনসাইড ও আউটার গ্রাউন্ড, পূর্বাচলের মাঠসহ কয়েকটি ভেন্যু দীর্ঘমেয়াদে উন্নয়নের পরিকল্পনায় রয়েছে। এই মৌসুমের মধ্যেই ১০০টির বেশি উইকেট তৈরির চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
বিভাগীয় ভেন্যুগুলোর অবস্থাও উঠে আসে তাঁর বক্তব্যে। বগুড়া, খুলনা, রাজশাহীসহ বেশ কয়েকটি বিভাগীয় মাঠ এখনো প্রায় দুই দশক আগের অবকাঠামোতেই চলছে বলে মন্তব্য করেন পাইলট। এসব মাঠে সেন্টার উইকেটের পাশে অতিরিক্ত উইকেট যোগ করে আধুনিক মানে নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। বরিশাল স্টেডিয়ামের কাজ প্রায় ৬০ শতাংশ শেষ হয়েছে বলেও জানান তিনি।
বিসিবির ভাবনায় বিভাগীয় সদর দপ্তরগুলোকে আলাদা আলাদা ‘হাব’ হিসেবে গড়ে তোলা। যেখানে জেলা পর্যায়ের ক্রিকেটাররা নিয়মিত অনুশীলন, মানসম্মত উইকেট এবং প্রয়োজনীয় সরঞ্জামের সুযোগ পাবে।
সব মিলিয়ে, জেলা লিগ সম্প্রসারণ আর ১০০ উইকেট তৈরির পরিকল্পনার মাধ্যমে তৃণমূল ক্রিকেটের ভিত্তি শক্ত করার দিকেই এগোচ্ছে বিসিবি। তবে পরিকল্পনা বাস্তবায়ন কতটা কার্যকর হয়, সেটাই এখন দেখার বিষয়।
ক্রিফোস্পোর্টস/২৫ডিসেম্বর২৫/টিএ
