নেইমারের ক্যারিয়ারের নিত্যসঙ্গী ইনজুরি। দারুন প্রতিভা নিয়ে ফুটবল জগতের প্রবেশ করেও একের পর এক ইনজুরিতে মাঠের বাইরে কাটিয়েছেন একটা বড় সময়। মাঠে নামলেই সকলকে পারফরমেন্সে বুঁদ করার নেইমার বারবার পরাস্ত হয়েছেন ইনজুরির কাছে। তবুও প্রতিবার ভক্তদের ভালোবাসার টানে ফিরে এসেছেন মাঠে, দেখিয়েছেন নিজের ক্রিয়া নৈপুণ্য।
এবার ৩৩ বছর বয়সী এই তারকা ফুটবলারের চূড়ান্ত লড়াই। শৈশবের স্মৃতি বিজড়িত ক্লাব সান্তোসকে অবনমন থেকে বাঁচিয়ে এবার ব্রাজিলের সমর্থকদের ২ যুগের স্বপ্ন হেক্সা বাস্তবে রূপ দিতে মুখিয়ে আছেন নেইমার।
আসন্ন ২০২৬ বিশ্বকাপের আগে নেইমারের একমাত্র বাধা সেই ইনজুরিই। ২০২৬ বিশ্বকাপে সেলেসাও স্কোয়াডে জায়গা করে নিতে হলে নেইমারকে থাকতে হবে শতভাগ ফিট। বাঁ পায়ের হাঁটুর চোট নিয়ে সান্তোসের সবশেষ তিন ম্যাচ খেলেছেন। শৈশবের ক্লাবে এই তিন ম্যাচে পাঁচ গোলে অবদান রেখেছেন।
ক্লাবকে অবনমনের হাত থেকে বাঁচানোর পর এবার নেইমারের সময় হয়েছে শরীরের দিকে মনোযোগ দেওয়ার। চোটের কারণে আরো এক সপ্তাহ আগেই নেইমারকে না খেলার পরামর্শ দিয়েছিল চিকিৎসকরা, সেই পরামর্শ উপেক্ষা করে নেইমার খেলেছেন মাঠে। তবে এবার দ্রুতই ছুরি-কাঁচির নিচে যাবেন নেইমার।
অপারেশনের জন্য নেইমার শরণাপন্ন হয়েছেন ব্রাজিলের সুপরিচিত এক অলৌকিক চিকিৎসকের কাছে। শিগগিরই বাম হাঁটুর জন্য আংশিক আর্থ্রোস্কোপিক মেনিসেকটমি করবেন তিনি।
অপারেশনের জন্য নেইমার প্রখ্যাত ব্রাজিলিয়ান ফিজিওথেরাপিস্ট এদুয়ার্দো সান্তোসের সঙ্গে পরামর্শ করবেন, যাকে বলা হয় ‘ডক্টর মিরাকল’। তিনি রোগীদের রেকর্ড সময়ের মধ্যে সেরে তোলার জন্য এবং প্রায়ই অপ্রচলিত চিকিৎসা পদ্ধতি ব্যবহার করার জন্য বিখ্যাত।
বেলো হরিজন্টে’এর পিউসি (পোপুলার ক্যাথলিক ইউনিভার্সিটি)-থেকে স্নাতক করে স্পোর্টস মেডিসিনে মাস্টার্স ও ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন করেছেন এদুয়ার্দো সান্তোস। এই চিকিৎসক বহু বছর চীনা সুপার লিগের ক্লাব সাংহাই এসআইপিজি-এর মেডিকেল বিভাগ পরিচালনা করেছেন। এছাড়াও নেদারল্যান্ডসের ভিটেসে এবং রাশিয়ার জেনিটে কাজ করেছেন।
ব্রাজিলের অনেক তারকা ফুটবলারের চিকিৎসার রেকর্ড আছে এদুয়ার্দোর। এরমধ্যে রয়েছেন হাল্ক, ওস্কার, ফিলিপ কুতিনহো এবং সম্প্রতি ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের মাতেউস কুনহা ও ভ্যান্ডারসন। বর্তমানে এই চিকিৎসক ইংল্যান্ডে ফুলহামের তারকা রদ্রিগো মুনিজের পুর্নবাসনের জন্য নিবিড়ভাবে কাজ করছেন।
ব্রাজিলিয়ান চিকিৎসকের ‘অলৌকিক’ নামের পেছনে আছে অনেক উদাহারণ। এরমধ্যে একটি ২০১৫ সালে সাবেক ব্রাজিলিয়ান ডিফেন্ডার ডেভিড লুইজকে দ্রুত সারিয়ে তুলে চমকে দিয়েছিলেন তিনি। চোটের কারণে অন্তত ৮-১০ সপ্তাহ মাঠের বাইরে থাকার কথা ছিল তাঁর। তবে অনেকটা অলৌকিকভাবেই মাত্র ১০ দিনের মধ্যে তাকে পরের ম্যাচে খেলাতে সক্ষম হন এদুয়ার্দো।
বিশ্বকাপের আগে পুরোপুরি ফিট হতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞবদ্ধ নেইমার। এরপরও অবশ্য ব্রাজিল কোচ কার্লো আনচেলত্তি সম্প্রতি সব সেলেসাও তারকাদের সতর্ক করেছেন। ৯০ শতাংশ ফিট হলেও নাকি কোনো খেলোয়াড়কে স্কোয়াডে রাখা হবে না, সে ভিনিসিয়ুস জুনিয়র হোক কিংবা নেইমার।
ক্রিফোস্পোর্টস/১০ডিসেম্বর২৫/এআই