পারলো না বাংলাদেশ, বৃথা গেল লোয়ার অর্ডার ব্যাটারদের লড়াই। ফাইনালে সহজ লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে টপ অর্ডার ও মিডল অর্ডারের ব্যর্থতায় আগেই ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় টাইগাররা। তবে শেষদিকে লোয়ার অর্ডারের কল্যাণে স্কোরলাইন সমান করতে সক্ষম হয় লাল-সবুজের দল। কিন্তু সুপার ওভারে পাকিস্তানের কাছে হেরে এশিয়া কাপ রাইজিং স্টার্স টুর্নামেন্টের শিরোপা হাতছাড়া করল আকবর আলীর দল।
রোববার (২৪ নভেম্বর) এশিয়া কাপ রাইজিং স্টার্সের ফাইনালে সুপার ওভারে হেরেছে বাংলাদেশ। দোহার ওয়েস্ট এন্ড পার্ক ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়ামে টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে সবকটি উইকেট হারিয়ে ১২৫ রান সংগ্রহ করে পাকিস্তান ‘এ’ দল। জবাবে ব্যাট করতে নেমে ২০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ১২৫ রান সংগ্রহ বাংলাদেশ ‘এ’ দল।
এরপর সুপার ওভারে বোলিং করতে আসেন আহমেদ দানিয়েল। তবে প্রথম ৩ বলে ৬ রান তুলেই ২টি উইকেট হারায় বাংলাদেশ। এরপর বাংলাদেশের হয়ে বোলিংয়ে আসে রিপন মন্ডল। প্রথম দুই বলে দুটি ইয়র্কারে মাত্র ২ রান দেন রিপন। তবে তৃতীয় ইয়র্কার করতে গিয়ে ফুল টস দিয়ে দেন তিনি। সহজ বল পেয়ে ৪ মেরে স্কোর সমান করে নেয় পাকিস্তান। এরপর চতুর্থ বলে সিঙ্গেল নিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় দলটি।

পাকিস্তানের জয়ের মুহূর্ত। ছবি- এসিসি
সহজ লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ঝোড়ো শুরু আভাস দেয় বাংলাদেশ। তবে জিসান আলম মাত্র ৬ রান করেই বিদায় নেন। তবে অপরপ্রান্তে বরাবরের মতোই মারকুটে ভঙ্গিতে খেলতে থাকেন হাবিবুর রহমান সোহান। তবে ভালো শুরু পেয়েও ইনিংস বড় করতে পারেননি এই ব্যাটার। ১৭ বলে ৩ চার ও ২ ছক্কায় ২৬ রান করে ফেরেন এই ওপেনার।
হাবিবুর ফেরার পরেই ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে বাংলাদেশ। ৩৬ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারানো টাইগাররা দলীয় ৫৩ রানেই হারায় সপ্তম উইকেটে। একে একে ব্যর্থ হয়ে ফিরে যান মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন, আকবর আলী, ইয়াসির আলী রাব্বি, মাহফুজুর রহমান রাব্বি ও মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী।
এরপর বাংলাদেশকে আশার আলো দেখান মেহরব হাসান ও রাকিবুল হাসান। এই জুটিতে দ্রুতগতিতে বেশকিছু রান তুলে নেন তারা। তবে ৯০ রানের মাথায় মেহরব আউট হয়ে গেলে ফের বিপদে পড়ে বাংলাদেশ। ২১ বলে ১ চার ও ১ ছক্কায় ১৯ রান করে বিদায় নেন এই অলরাউন্ডার।
শেষদিকে বাংলাদেশের একমাত্র ভরসা ছিলেন রাকিবুল। তবে তিনিও আর ইনিংস লম্বা করতে পারেননি। দলীয় ৯৬ রানের মাথায় এলবিডব্লুর শিকার হয়ে ফিরে যান তিনি। ২১ বলে ৩ চার ও ১ ছক্কায় ২৪ রান করে বিদায় নেন তিনি। এরপর কিছুক্ষণ দেখেশুনে খেলে ১৯তম ওভারে জ্বলে ওঠে সাকলাইন ও রিপন। এই ওভারে দুজন মিলে ৩ ছক্কায় ২০ রান তুলে নেন। শেষ ওভারে বাংলাদেশের জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ৭ রান। তবে বাংলাদেশ ৬ রানের বেশি নিতে পারেনি। ফলে স্কোরলাইন সমান হয় এবং ম্যাচ গড়ায় সুপার ওভারে।
পাকিস্তানের পক্ষে ৪ ওভারে মাত্র ১১ রান দিয়ে ৩টি উইকেট শিকার করেন সুফিয়ান মুকিম। আহমেদ দানিয়েল ৪ ওভারে মাত্র ১১ রান দিয়ে ২টি উইকেট নেন। এছাড়া আরাফাত মিনহাস ২টি এবং সাদাকাত ও মাসুদ একটি করে উইকেট নেন।
এর আগে ব্যাটিংয়ে নেমে টপ অর্ডারে মাজ সাদাকাত ছাড়া বাকিরা ব্যর্থ হয়েছে। সাদাকাত ১৮ বলে ২৩ রান করেন। তবে ইয়াসির খান ও মোহাম্মদ ফাইক ডাক মেরে ফেরেন। এরপর মিড অর্ডারেও ব্যর্থ হয়েছেন ঘৌরি ও নিয়াজি। দুজনেই ফেরেন ৯ রান করে। পরবর্তীতে আরাফাত মিনহাসের ২৩ বলে ২৫ এবং সাদ মাসুদ ২৬ হলে ৩৮ রান করে পাকিস্তানকে লড়াইয়ের পুঁজি এনে দেন।

বোলিংয়ে দুর্দান্ত ছিল বাংলাদেশ ‘এ’ দল। ছবি- এসিসি
বাংলাদেশের হয়ে ৪ ওভারে ২৫ রান দিয়ে ৩টি উইকেট নেন রিপন মন্ডল। সমান ওভারে মাত্র ১৬ রান খরচায় ২টি উইকেট শিকার করেন রাকিবুল হাসান। এছাড়া একটি করে উইকেট নেন মেহরব হাসান, জিসান আলম ও আব্দুল গাফফার সাকলাইন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
পাকিস্তান ‘এ’ দল : ১২৫/১০ (২০ ওভার) ও ৭/০ (০.৪ ওভার)
বাংলাদেশ ‘এ’ দল : ১২৫/৯ (২০ ওভার) ও ৬/২ (০.৩ ওভার)
ফলাফল : পাকিস্তান ‘এ’ দল সুপার ওভারে জয়ী
ক্রিফোস্পোর্টস/২৪নভেম্বর২৫/বিটি