২০২৬ বিশ্বকাপ সামনে রেখে আবারও আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে মেসি–রোনালদো। দুই তারকার বয়স এখন ক্যারিয়ারের শেষ প্রান্তে হলেও জাতীয় দলের পরিকল্পনায় তারা দুজনই এখনো রয়েছেন। আর্জেন্টিনা আগেই বিশ্বকাপের টিকিট নিশ্চিত করেছে। পর্তুগালও বাছাইপর্বে নিজেদের জায়গা পাকাপোক্ত করেছে। ফলে ফুটবল ইতিহাসে প্রথমবার দুই খেলোয়াড় একসঙ্গে ছয়টি বিশ্বকাপে নাম লেখাতে যাচ্ছেন।
রোনালদো আগেই জানিয়েছেন, আগামী বিশ্বকাপ হবে তাঁর শেষ আসর। বয়স নিয়ে প্রশ্ন উঠলেও জাতীয় দলে এখনও তিনি নিয়মিত খেলছেন এবং গোলও করে যাচ্ছেন। ইতোমধ্যেই দেখা গেছে বাছাইপর্বে পর্তুগালের আক্রমণে তাঁর অভিজ্ঞতা ও উপস্থিতি বড় ভূমিকা রেখেছে। অন্যদিকে মেসি সরাসরি কিছু না বললেও আর্জেন্টিনা দলের ভেতরের বার্তা পরিষ্কার ২০২৬ বিশ্বকাপের আগে তাঁকে কেন্দ্র করেই পরিকল্পনা সাজাচ্ছে দল। কোচ স্কালোনিও প্রকাশ্যেই বলেছেন, শারীরিকভাবে প্রস্তুত থাকলে মেসি দলকে নেতৃত্ব দেবেন। সম্প্রতি মেসিও নানান সাক্ষাৎকারে ২০২৬ বিশ্বকাপ খেলার ব্যাপারে ইতিবাচক ইঙ্গিত দিয়েছেন।
এদিকে দুজনের বিশ্বকাপ যাত্রা শুরু হয়েছিল ২০০৬ সালে। এতদিনে তারা জাতীয় দলের হয়ে বহু বড় সাফল্য এনে দিয়েছেন। মেসি ২০২২ সালে আর্জেন্টিনাকে বিশ্বকাপ জেতান, চারবার ফাইনালে খেলেন, সর্বোচ্চ ম্যাচ ও গোলেও শীর্ষে রয়েছেন তিনি। রোনালদোও ইউরোপীয় ফুটবলে পর্তুগালের সবচেয়ে সফল সময়ের খেলোয়াড়, জাতীয় দলের হয়ে করেছেন শতাধিক গোল। তবে বিশ্বকাপে এখনো কোনো ট্রফি অর্জন আসেনি।
তবে প্রশ্ন থেকে যায় যে, শ্রেষ্ঠত্ব বিচার কি শুধুই বিশ্বকাপ ট্রফি দিয়ে? ফুটবলে সর্বোচ্চ সাফল্য অবশ্যই বিশ্বকাপ, কিন্তু দুই দশক ধরে ক্লাব ও জাতীয় দলে ধারাবাহিক পারফরম্যান্স, রেকর্ড, প্রভাব এসবও মূল্যায়নের বড় অংশ। মেসি বিশ্বকাপ জিতেছেন, রোনালদো ইউরো জিতেছেন। মাঠের পারফরম্যান্স, দীর্ঘদিনের সাফল্য এবং দলকে এগিয়ে নেওয়ার সক্ষমতা দুজনকেই আলাদা জায়গায় দাঁড় করিয়েছে।
২০২৬ বিশ্বকাপ তাই শুধু একটি টুর্নামেন্ট নয়। এটি ফুটবলের দুই যুগের শেষ অধ্যায়ের সম্ভাব্য মঞ্চ। যেখানে মেসি–রোনালদোর যাত্রা শেষ হতে চলেছে ফুটবলের আসরে। তাই বিশ্বকাপ জেতা একটি বিশাল অর্জন হলেও, মেসি-রোনালদোর শ্রেষ্ঠত্ব শুধুমাত্র একটি ট্রফির উপর নির্ভর করে না, বরং তাদের ধারাবাহিকতা, দীর্ঘ ক্যারিয়ার এবং ব্যক্তিগত অর্জনের উপরও নির্ভরশীল।
ক্রিফোস্পোর্টস/১৭নভেম্বর২৫/টিএ