বাংলাদেশ দলের নতুন ব্যাটিং কোচ হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন মোহাম্মদ আশরাফুল। তিনি জানিয়েছেন, ব্যাটসম্যানদের টেকনিক্যাল পরিবর্তনের চেয়ে মানসিকভাবে প্রস্তুত করাতেই বেশি জোর দিতে চান তিনি। আসন্ন আয়ারল্যান্ড সিরিজকে সামনে রেখে এখন ব্যাটিং ইউনিটের মানসিক দৃঢ়তা নিয়ে কাজ শুরু করেছেন সাবেক এই অধিনায়ক।
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) আশরাফুলকে নিয়োগ দেওয়ার পর প্রায় ১১ বছর পর আবার জাতীয় দলের ড্রেসিংরুমে ফিরছেন তিনি। এর আগে ম্যাচ ফিক্সিংয়ের দায়ে ৮ বছরের নিষেধাজ্ঞা শেষে খেলোয়াড় হিসেবে আর জাতীয় দলে ফিরতে পারেননি আশরাফুল। এবার নতুন ভূমিকায় মাঠে ফেরার সুযোগ পেয়েছেন তিনি।
ক্রিকবাজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আশরাফুল বলেন, “আলহামদুলিল্লাহ, আমি আসলে গত দুই বছর ধরে ভাবছিলাম ক্রিকেট ছাড়ার পরও যেন মাঠের সঙ্গেই থাকি। কোচিংয়ের দিকেই মনোযোগ দিচ্ছিলাম। সুযোগও পেয়েছি- রংপুর রাইডার্সের হয়ে দুই মৌসুম, গ্লোবাল সুপার লিগে কাজ করেছি, তারপর বিপিএলে এক বছর, এখন এনসিএলেও কাজ করছি। জাতীয় দলের প্রায় সবার সঙ্গেই খেলেছি, কাজ করার অভিজ্ঞতাও আছে।”
তিনি আরও বলেন, “অনেক বছর জাতীয় দলে খেলেছি, অনেক কোচের অধীনে থেকেছি। এবার সেই অভিজ্ঞতাগুলো তরুণদের সঙ্গে ভাগ করে নিতে চাই। ভালো লাগছে আবার বাংলাদেশ দলের ড্রেসিংরুমে ফিরতে পেরে।”
নতুন দায়িত্বে তার কাজের ধরন নিয়েও স্পষ্ট ছিলেন আশরাফুল। তিনি বলেন “আমি এখন যা নিয়ে কাজ করি, সেটা হলো-আমি জীবনে কেন সফল হয়েছি আর কোথায় ব্যর্থ হয়েছি, কীভাবে ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছিলাম এবং কোথায় হারিয়েছি তা শেয়ার করি। আমি বিশ্বাস করি, ক্রিকেটে টেকনিকের চেয়ে মানসিকভাবে শক্ত হওয়াটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ। মাথা পরিষ্কার থাকলে পারফরম্যান্সও সহজ হয়ে যায় এই দিকেই বেশি কাজ করতে চাই,” বলেন তিনি।
ব্যাটসম্যানদের টেকনিক নিয়ে বড় কোনো পরিবর্তন আনার পরিকল্পনা নিয়ে তিনি বলেন, “না, টেকনিকে বেশি পরিবর্তন আনা আসলে কাজের না। চন্দরপলকে দেখুন-ওর ভঙ্গি একেবারেই আলাদা ছিল, তবু হাজার হাজার রান করেছে। কারণ, সে মানসিকভাবে দৃঢ় ছিল। আমি চাই আমাদের খেলোয়াড়রাও সেই জায়গায় পৌঁছাক।”
আশরাফুল মনে করেন, টেস্ট দলে অভিজ্ঞ খেলোয়াড়দের উপস্থিতি তার কাজ সহজ করে দেবে। “টেস্ট দলে মুশফিক, শান্ত, মিরাজ, লিটন, মুমিনুল সবাই অভিজ্ঞ। তাই ওদের নিয়ে কাজ করা সহজ হবে। আর টি-টোয়েন্টিতে পাওয়ারের চেয়ে টাইমিং ঠিক করাটা গুরুত্বপূর্ণ। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে যখন ১৪০ কিলোমিটার গতিতে বল আসে, তখন সঠিক টাইমিংই আসল জিনিস।”
সালাহউদ্দিনকে নিয়ে কোনো ভুল বোঝাবুঝি নেই বলেও জানিয়েছেন আশরাফুল। “সালাহউদ্দিন ভাইয়ের সঙ্গে আমার সম্পর্ক সবসময় ভালো। আমি যখন অধিনায়ক ছিলাম, তখন তিনিও কাজ করেছেন। তার সঙ্গে আমার কোনো সমস্যা নেই,” বলেন তিনি।
বাংলাদেশের ব্যাটিং ইউনিটে মানসিক দৃঢ়তা তৈরি করাই এখন আশরাফুলের মূল লক্ষ্য। তার বিশ্বাস, মাথা ঠান্ডা রেখে আত্মবিশ্বাস নিয়ে খেলতে পারলেই বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা আরও উন্নতি করতে পারবেন।
ক্রিফোস্পোর্টস/৬নভেম্বর২৫/টিএ