আইসিসিকে ভারত বিভিন্নভাবে নিয়ন্ত্রণ করছে বলে মুখ খুললেন সাবেক ম্যাচ রেফারি ক্রিস ব্রড। এক সংবাদমাধ্যমে তিনি জানিয়েছেন, একসময় তাঁকে স্লো ওভার রেটের শাস্তি থেকে ভারতকে বাঁচাতে ‘সহানুভূতিশীল’ হতে বলা হয়েছিল।
ব্রিটিশ দৈনিক ‘দ্য টেলিগ্রাফ’-এ দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ব্রড বলেন, “এক ম্যাচে ভারত নির্ধারিত সময়ের চেয়ে তিন-চার ওভার পিছিয়ে ছিল। নিয়ম অনুযায়ী জরিমানা হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আমাকে ফোন করে বলা হয়, ‘সহানুভূতিশীল হোন, কিছু সময় বের করে দিন, কারণ এটা ভারত।’ পরে কোনোভাবে আমরা কিছু অতিরিক্ত সময় দেখিয়ে ওভার রেট কমিয়ে দিই।”
ব্রড আরও জানান, “পরের ম্যাচেও একই ঘটনা ঘটে। সৌরভ গাঙ্গুলী তখন দ্রুত ওভার শেষ করার নির্দেশ শুনছিল না। আমি ফোন করে জানতে চাই, এখন কী করব? তখন আমাকে বলা হয়, ‘শুধু তাকে জরিমানা করো।”
তিনি আরও বলেন, “আমি সবসময় সঠিক আর ভুলের মধ্যে বিশ্বাস করি। কিন্তু অনেক জায়গায় এই পার্থক্য এতটাই ঘোলা যে বোঝা কঠিন। তবু এত বছর টিকে থাকা সহজ ছিল না।”
এছাড়া তিনি জানান, ২০২৩ সালের অ্যাশেজ চলাকালে নিজের ছেলে স্টুয়ার্ট ব্রডের ডেভিড ওয়ার্নারকে ১৭তম বারের মতো আউট করার একটি মিম শেয়ার করায় আইসিসি তাঁকে সতর্ক করেছিল।
ভারতের প্রভাব নিয়ে ব্রড বলেন, “এখন সব অর্থ ভারতের হাতে, আর তারা বিভিন্নভাবে আইসিসিকে নিয়ন্ত্রণ করছে। আমি খুশি যে এখন আর এর অংশ নই। কারণ ক্রিকেট এখন অনেক বেশি রাজনৈতিক হয়ে গেছে।”
উল্লেখ্য, ২০০৩ থেকে ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আইসিসির ম্যাচ রেফারি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন ক্রিস ব্রড। এই সময় তিনি ১২৩টি টেস্ট, ৩৬১টি ওয়ানডে এবং ১৩৮টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ পরিচালনা করেন। তাঁর কথায়, “আমি আরও কাজ করতে চেয়েছিলাম, কিন্তু আইসিসি আমার চুক্তি নবায়ন করেনি।”
ইংল্যান্ডের সাবেক ওপেনার ব্রড দেশের হয়ে ২৫ টেস্ট ও ৩৪ ওয়ানডে খেলেছেন। ২০০৯ সালে লাহোরে শ্রীলঙ্কা দলের ওপর সন্ত্রাসী হামলার সময়ও তিনি মাঠে উপস্থিত ছিলেন। নিজের অভিজ্ঞতা নিয়ে বলেন, “রাজনৈতিক ও শারীরিকভাবে অনেক বিপদ সামলেছি। এখন মনে হয়, ২০ বছর অনেক বড় সময়। কিছু জায়গায় আর না যাওয়াই ভালো।”
ক্রিফোস্পোর্টস/২৮অক্টোবর২৫/টিএ