
টানা চার ম্যাচ হেরে সমর্থকদের হতাশায় ফেলে দিয়েছিল লিভারপুল। কেউ কেউ ভাবছিল, ১৯৫৩ সালের পর টানা পাঁচ হারের লজ্জার রেকর্ড হয়তো গড়েই ফেলবে দলটি! কিন্তু বুধবার রাতে সেই শঙ্কা দূর হয়ে গেছে। চ্যাম্পিয়নস লিগে জার্মান ক্লাব আইনট্রাখট ফ্রাঙ্কফুর্টকে ৫-১ গোলের বড় ব্যবধানে হারিয়ে দারুণভাবে জয়ে ফিরেছে লিভারপুল।
ম্যাচের শুরুটা ছিল ফ্রাঙ্কফুর্টের নিয়ন্ত্রণে। মাত্র নবম মিনিটেই লিভারপুলের ডিফেন্স ভেদ করে গোল করে বসে স্বাগতিকরা। মারিও গোৎসের পাস ধরে রাসমুস ক্রিস্টেনসেনের নিচু শটে এগিয়ে যায় দলটি।
কিন্তু বেশিক্ষণ এগিয়ে থাকতে দেয়নি লিভারপুল। ৩৫ মিনিটে গোল করে সমতায় ফেরান হুগো একিতিকে। তিনি আগে ফ্রাঙ্কফুর্টের হয়ে খেলতেন। নিজের সাবেক ক্লাবের বিপক্ষে গোল করার পর খুব বেশি উদযাপনও করেননি তিনি। তবে এই গোলই বদলে দেয় ম্যাচের গতি।
গোলের পর লিভারপুলও ধীরে ধীরে নিজেদের ছন্দে ফেরে। কর্নার থেকে ৩৯ মিনিটে হেডে গোল করেন দলের ডিফেন্ডার ভিরজিল ফন ডাইক। এরপর ৪৪ মিনিটে একইভাবে আরেক ডিফেন্ডার ইব্রাহিম কোনাতে হেড দিয়ে গোল করে ব্যবধান বাড়ান। প্রথমার্ধ শেষে ৩-১ গোলে এগিয়ে যায় লিভারপুল।
দ্বিতীয়ার্ধে মাঠে নেমে আরও আত্মবিশ্বাসী হয়ে খেলে ইংলিশ জায়ান্টরা। ৬৬ মিনিটে তার নিখুঁত পাস থেকে গোল করেন কোডি গাকপো। এরপর ৭০ মিনিটে আবারও ভির্ৎজের বানানো আক্রমণ থেকে গোল পান ডমিনিক সোবোস্লাই।
৫-১ গোলের ব্যবধানের পর আর ম্যাচে ফেরার কোনো সুযোগই পায়নি ফ্রাঙ্কফুর্ট। ডিফেন্স বিভাগে ছিল আগের মতোই এলোমেলো, যেটার সুযোগ নিয়েছে লিভারপুলের আক্রমণভাগ।
এই জয় লিভারপুলের জন্য অনেক বড় স্বস্তি। টানা চার ম্যাচ হারের পর দলের ভেতরে আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে আনাটা ছিল সবচেয়ে জরুরি। নতুন কোচ আরনে স্লটের কৌশল এবার দারুণ কাজ করেছে। মোহাম্মদ সালাহকে বেঞ্চে রেখে তিনি একিতিকে ও ইসাককে সামনে খেলিয়েছেন যার ফল মিলেছে ম্যাচে।
এদিকে একিতিকের গোলের মাধ্যমে লিভারপুল ইউরোপীয় প্রতিযোগিতায় ৩০০তম অ্যাওয়ে গোলের রেকর্ড গড়ে। পরে কোনাতে গোল করেন দলের হয়ে চ্যাম্পিয়নস লিগে ২০০তম অ্যাওয়ে গোল।
এদিকে ফ্রাঙ্কফুর্টের এই মৌসুমে এখন পর্যন্ত কোনো ম্যাচে ক্লিনশিট রাখতে পারেনি। শেষ নয় ম্যাচে গোল খেয়েছে ২০টিরও বেশি। ডিফেন্সের এই দুর্বলতাই তাদের বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
অন্যদিকে, লিভারপুলের এই জয় দলকে নতুন করে গুছিয়ে নিতে সাহায্য করবে। বড় জয় শুধু পয়েন্ট টেবিলেই নয়, মানসিক দিক থেকেও দলকে শক্তি দেয়। সমর্থকেরা আশা করছেন, এখান থেকেই নতুন করে পুরনো সেই জয়ের ধারায় ফিরবে লিভারপুল।
ক্রিফোস্পোর্টস/২৩অক্টোবর২৫/টিএ
