
চোট আর নেইমার— শব্দযুগল যেন এখন একে অপরের সমার্থক৷ চোটের কথা আসলেই প্রসঙ্গ আসে নেইমারের মাসের পর মাস মাঠের বাইরে থাকার গল্প৷ আবার নেইমারের কথা আসলেও অনায়াসে চলে আসে চোটের প্রসঙ্গ। ক্যারিয়ারে বহুসময় চোটের কারণে থাকতে হয়েছে মাঠের বাইরে, কিন্তু যখনি ফিরেছেন সেরাটা দিয়ে খেলেছেন এই ব্রাজিলিয়ান৷
আল হিলাল থেকে শৈশবের ক্লাব সান্তোসে ফিরেছেন বড্ড আশা নিয়ে৷ শৈশবের ক্লাবেই ক্যারিয়ারের ইতি টানতে চেয়েছেন এই তারকা৷ কিন্তু সেখানেও একের পর এক চোটের আঘাত, মাঠে খেলতে পেরেছেন কমই৷ চলতি মৌসুমে সান্তোসের হয়ে ব্রাজিলের শীর্ষ লিগে নেইমার খেলেছেন মাত্র ৭ ম্যাচ৷ দলের অর্ধেক ম্যাচেই তাকে পায়নি সান্তোস। নেইমার বিহীন সান্তোসও নেই ছন্দে৷ ১৭ ম্যাচে ৪ জয় নিয়ে তারা রয়েছে লিগের অবনমন অঞ্চলে।
অবশ্য চলতি মৌসুমে এখনো ২১ ম্যাচ রয়েছে নেইমারদের৷ তাই অবনমন এড়াতে পর্যাপ্ত ম্যাচই পাচ্ছে সান্তোস৷ ২০২৫ সালের আগস্টে নেইমারদের খেলতে হবে ৫ ম্যাচ, এর মধ্যে শীর্ষে থাকা ক্রুজেইরার বিপক্ষেও রয়েছে ম্যাচ৷ সবমিলিয়ে সান্তোসের সামনে এক কঠিন পরীক্ষা অপেক্ষা করছে।
আরও পড়ুন:
» আর্জেন্টিনা-ব্রাজিল– কার ঝুলিতে কত শিরোপা?
» একজন স্পোর্টিং ডিরেক্টর যেভাবে বদলে দেন ক্লাবের ভাগ্য
এক নজরে আগস্টে নেইমারদের যত খেলা
ম্যাচ | তারিখ |
৫ আগস্ট | সান্তোস-জুভেন্টুড |
১০ আগস্ট | ক্রুজেইরো-সান্তোস |
১৭আগস্ট | সান্তোস- ভাস্কো দ্য গামা |
২৪ আগস্ট | বাহিয়া-সান্তোস |
৩১ আগস্ট | সান্তোস-ফ্লুমিনেন্স |
গত ২৪ জুলাই সান্তোস ২-১ গোলে হেরে গেছে ইন্তারনাসিওনালের কাছে। এ হারেই তারা অবনমন অঞ্চলে নেমে গেছে। ঘরের মাঠে ২-০ গোলে পিছিয়ে পড়েছিল সান্তোস। তবে শেষ দিকে দলটি ঘুরে দাঁড়ানোর আভাস দেয়। যোগ করা সময়ের প্রথম মিনিটেই গোল করেন নেইমারের আক্রমণভাগের সঙ্গী আলভারো বারিয়াল।
এরপর সমতাসূচক গোলের আশায় আরও আক্রমণ শানাতে থাকে সান্তোস। রেফারি শেষ বাজি বাজানোর মিনিট দুয়েক আগে বাঁ পায়ে জোরালো শট নেন নেইমার। বল ডান পাশের পোস্টে লেগে ফিরলে ঝাঁপিয়ে গ্লাভসবন্দি করেন ইন্তারনাসিওনালের উরুগুইয়ার গোলকিপার সার্জিও রোচেত।
কিন্তু নেইমার মনে করেন, রোচেত গ্লাভসবন্দি করার আগে বল গোললাইন পেরিয়ে গেছে। তাই বাঁধনহারা উদযাপনেও মেতে উঠেন তিনি, একপর্যায়ে লাথি মেরে কর্নার ফ্ল্যাগও ভেঙে ফেলেন। এমনকি জার্সিও প্রায় খুলতে বসেছিলেন। নেইমারের গোলে সান্তোস হার এড়িয়েছে ভেবে সান্তোসের সমর্থকেরাও উদযাপনে মাতেন৷
ঠিক তখনি রেফারি দিলেন ভিন্ন সিদ্ধান্ত। রেফারি লুকাস লুকাস পাওলো তোরেজিনের মনে হয়েছে, বল ইন্তারনাসিওনালের গোললাইন পেরোয়নি। তাই খেলা চালিয়ে যাওয়ার সংকেত দেন। এতে হতাশ হয়ে পড়েন নেইমার, হাত নেড়ে রেফারির সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানান। এর কিছুক্ষণ পরই রেফারি শেষ বাঁশি বাজান। এতে হার নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয় নেইমারদের৷
মাঠ ছাড়ার পথে আরেক অঘটনের জন্ম দেন নেইমার৷ গ্যালারির কাছে গিয়ে মেজাজ হারিয়ে সান্তোসের এক সমর্থকের সঙ্গে তর্কেও জড়ান নেইমার। ব্রাজিলের ফুটবলবিষয়ক প্ল্যাটফর্ম প্লানেতা দো ফুটবলের দাবি, ওই সমর্থকের সঙ্গে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় হয়েছে নেইমারের। ওই দর্শককে উদ্দেশ্য করে নেইমার বলেছেন,‘পারলে এখানে আয়। নয়তো গোল্লায় যা!’ পরে অবশ্য সতীর্থ গোলকিপার জোয়াও পাওলো নেইমারকে সরিয়ে নিয়ে গেলে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
মাঠের বাইরে বিতর্ক আর মাঠের পারফরম্যান্সেও সেরাটা দিতে পারছেন না নেইমার৷ সান্তোসের জার্সিতে চলতি মৌসুমে ৭ ম্যাচ খেলে গোলের দেখা পেয়েছেন মাত্র ১টি৷ পাওলিস্তা চ্যাম্পিয়ন্সশিপসহ ১৫ ম্যাচে তার পা থেকে এসেছে ৪ গোল ও ৩ অ্যাসিস্ট।
ক্রিফোস্পোর্টস/২৬জুলাই২৫/টিএইচ/বিটি
